গ্রন্থ আলোচনা Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=গ্রন্থ-আলোচনা কুড়িগ্রাম জেলার তথ্য ও সংবাদ Tue, 21 Feb 2017 12:51:09 +0000 en-US hourly 1 https://www.ulipur.com/wp-content/uploads/2022/10/1665889308.png গ্রন্থ আলোচনা Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=গ্রন্থ-আলোচনা 32 32 রমনা মেইল: উত্তরের বোরাক https://www.ulipur.com/?p=3185 Fri, 10 Feb 2017 08:57:34 +0000 http://www.ulipur.com/?p=3185 জরীফ উদ্দীন: রমনা মেইল চলছে পার্বতীপুর জংশন থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত ছোট বড় খ্যাত অখ্যাত ১৬ টি স্টেশন কে পিছনে ফেলে। পিছনে ফেলে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, স্কুলকলেজ, হাটবাজার, নদীনালা ইত্যাদি। ট্রেনের কামরাগুলো নাহারী ঘরের মত। বসতে হয় গাদাগাদি করে, অনেক সময় বসারও স্থান হয় না। থাকতে হয় বাদুড়ের মত ঝুলে। সেখানে চলে সব কিছুই। হাসি-কান্না, [...]

The post রমনা মেইল: উত্তরের বোরাক appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
রমনা মেইল
আবু রায়হান
সময় প্রকাশন
প্রচ্ছদ ধ্রুব এষ
মূল্যঃ ২০০ টাকা

জরীফ উদ্দীন:

রমনা মেইল চলছে পার্বতীপুর জংশন থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত ছোট বড় খ্যাত অখ্যাত ১৬ টি স্টেশন কে পিছনে ফেলে। পিছনে ফেলে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, স্কুলকলেজ, হাটবাজার, নদীনালা ইত্যাদি। ট্রেনের কামরাগুলো নাহারী ঘরের মত। বসতে হয় গাদাগাদি করে, অনেক সময় বসারও স্থান হয় না। থাকতে হয় বাদুড়ের মত ঝুলে। সেখানে চলে সব কিছুই। হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখের আলাপ, চাপাবাজি, গালগল্প, গান-বাজনা, জুয়াবাজি কিংবা মানুষের অর্থ লুটে খাওয়া।

হরেক রকম মানুষের আসা যাওয়া রমনা মেইলে কেউ উঠে কেউ নামে তার ইয়ত্তা নেই। যাত্রীদের টিকেট না কাটলেও সমস্যা নেই। চেকারের হাতে টিকেটের হাফ ভাড়া কিংবা তার অর্ধেক দিলে হয়ে যায়। তাও দেওয়া ঠিক নয় অনেকে মনে করেন। এই মনে করা মানুষগুলো হঠাৎ একদিন পরে বিপদে। কুড়িগ্রাম নতুন স্টেশনে বসে মোবাইল চেকিং। সেখানেও ঘটে অদ্ভুদ কিছু ঘটনা। সত্যি বলতে কি! এই লাইনে ট্রেন আসে দেরিতে চলে গরুর গাড়ির মত এমনই ইঙ্গিত পাওয়া যায় আবু রায়হান’র ‘রমনা মেইল’ উপন্যাসে। হয়ত আপনি কোন দিন রমনা মেইলে চড়েন নি। কিন্তু বইটা পড়লে চোখ বন্ধ করলেই ঘুরে আসবেন মনিরুলের মত খালা বাড়ি বদর গঞ্জ থেকে সোজা চিলমারীর রমনা স্টেশন। ট্রেনে দেখা মিলবে হকার থেকে শুরু করে ফকির, বাটপার কিংবা কিছু নিরহ ভালো মানুষের সাথে। ট্রেনে অনিচ্ছা সত্ত্বেও শুনতে হবে গল্প, দেখতে হবে গোপালের সাক্ষীরর মতো বিভিন্ন ঘটনা আর জমা হবে অভিজ্ঞতা এবং ট্রেনের চলমান কিংবা নিভৃতে ঘটে যাওয়া উত্তর বঙ্গের নানা ঘটনা। উপন্যাসের নায়ক মনিরুল মুনির এক সাদাসিধে বালক। তার চলার আর স্মৃতি কথা নিয়ে চলে উপন্যাস শেষ অবধি। যদিও কিশোর উপন্যাস তারপরও উপন্যাসিক কিন্তু প্রেমহীন নন। প্রথমে খালাতো বোন নিভাকে মনে হবে মনিরের বিপরীত প্রধান চরিত্র। ট্রেন চলতে চলতে তা আর মনেই থাকে না। উপন্যাসের শেষ পর্যায়ে কুড়িগ্রামে দেখা মেলে একটি মেয়ের। মেয়েটি দেখতে মুনিরের খালাতো বোন নিভার মতই। চোখাচোখি করতে করতে আসে বালাবাড়ি পর্যন্ত। মুনিরের তরুণ মনের অবচেতনে তৈরি করে তার সাথে এক সংলাপ। নিজেই মেয়েটির নাম দেয় নিশি। মেয়েটি নেমে গেলে কেমন উদাস হয়ে যায় মুনির। লেখক একজন মোসলমান হয়েও তুলে ধরেন খুবই সতর্কতায় মুনিরের চিন্তায় দুর্গাপুর স্টেশন থেকে পাঁচপীর স্টেশনের নামকরণের চিন্তাটি। স্থানের ‘নাম বদল করলেই কি হিন্দু বা মুসলিম হওয়া যায় না কি!’ যার মধ্য দিয়ে উদরতা ফুটে উঠে। ট্রেন রমনা স্টেশন থেকে আবারো ফিরে যাচ্ছে যেখান থেকে এসেছিল। উপন্যাসটির পাতা উল্টাতেই মন কেড়ে নেয়। শুরুর কথা।

সবমিলে একটি অসাধারণ উপন্যাস।

The post রমনা মেইল: উত্তরের বোরাক appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
কাঁটাতারে ফেলানী ও আমাদের সমাজ https://www.ulipur.com/?p=3085 Mon, 23 Jan 2017 09:55:01 +0000 http://www.ulipur.com/?p=3085 জরীফ উদ্দীন: আব্দুল খালেক ফারুক একজন প্রগতিশীল শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মী। পেশায় সাংবাদিক। সংবাদের জন্য ছুটে বেড়ান বিভিন্ন স্থানে। এই অভিজ্ঞতাই তার গল্পের মূল উপজীব্য। চারপাশে ঘটে যাওয়া জীবনের গল্পই বলতে চান তিনি। তার গল্পে সুনিপুণ ভাবে ফুটে উঠেছে সমাজের কূপমণ্ডূকতা, হিংসা, ধর্মান্ধতা, লোভ, অন্ধবিশ্বাস, অপরাজনীতি, শিক্ষা ব্যবসা, প্রেম-বিচ্ছেদ। গল্পগুলো পড়তে পড়তে হাড়িয়ে যেতে [...]

The post কাঁটাতারে ফেলানী ও আমাদের সমাজ appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
কাঁটাতারে ঝুলে অাছে ফেলানী_আব্দুল খালেক ফারুক। প্রকাশকঃ শব্দ শৈলী। প্রচ্ছদঃ নাসিম আহমেদ মূল্যঃ ১৫০ টাকা।
কাঁটাতারে ঝুলে অাছে ফেলানী
আব্দুল খালেক ফারুক
প্রকাশকঃ শব্দ শৈলী
প্রচ্ছদঃ নাসিম আহমেদ
মূল্যঃ ১৫০ টাকা

জরীফ উদ্দীন:

আব্দুল খালেক ফারুক একজন প্রগতিশীল শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মী। পেশায় সাংবাদিক। সংবাদের জন্য ছুটে বেড়ান বিভিন্ন স্থানে। এই অভিজ্ঞতাই তার গল্পের মূল উপজীব্য। চারপাশে ঘটে যাওয়া জীবনের গল্পই বলতে চান তিনি। তার গল্পে সুনিপুণ ভাবে ফুটে উঠেছে সমাজের কূপমণ্ডূকতা, হিংসা, ধর্মান্ধতা, লোভ, অন্ধবিশ্বাস, অপরাজনীতি, শিক্ষা ব্যবসা, প্রেম-বিচ্ছেদ। গল্পগুলো পড়তে পড়তে হাড়িয়ে যেতে হবে সমাজের রন্ধে রন্ধে। পড়তে পড়তে মনে হবে চোখের সামনে দেখতেছি ঘটে যাওয়া দৃশ্যপট। প্রথমগল্প “কাঁটাতারে ঝুলে আছে ফেলানী” ফেলানীর রাত শেষ হলেই বিয়ে খালাতো ভাই আমজাদের সঙ্গে। তাই রাতের আধার থাকতেই ফেলানী তার বাবার সঙ্গে সিমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আচ্ছিলেন দালালদের সাহায্যে। বাবা কাঁটাতারে উপর পার হচ্ছেন ফেলানী তার পিছে। হঠাৎ গুলির শব্দ…….। এমনি লোমহর্ষক সত্য ঘটনার বহিঃপ্রকাশ। তারপর ফেলানীকে নিয়ে দলীয় রাজনীতির চেষ্টা, আব্রাহাম স্যারের ফেলানী হত্যার ঝুলুন্ত কেস লড়া সব মিলিয়ে একটি অসাধারণ গল্প।

দ্বিতীয় গল্প রোগমুক্তি। ধর্মান্ধতায় ছেড়ে গেছে সমাজ। আর এই সুযোগে নামধারী মাওলানারা সহজ সরল মানুষ ঠকিয়ে করছে ধর্ম ব্যবসা। কারো কঠিন রোগ হলে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে মান্নত করে বিভিন্ন মাদরাসা, মসজিদ কিংবা মাজারে অথবা ওয়াজ মাহফিল। এরকম এক মান্নতে ওয়াজ মাহফিল চলাকালীন সময় যার রোগ মুক্তির জন্য এই মাহফিল সে দুনিয়া ত্যাগ করে পাড়ি জমায় পরপারে।

বৃদ্ধ মৃধা ভাতিজার জন্য কনে দেখতে গিয়ে নিজেই বিয়ে করার সীদ্ধান্ত নেন তার মৃত বৌয়ের মতো কনে হওয়ায়। এক রাতের আধারে নতুন বৌকে ঘরে তুলতে গেলে সমস্যা দেখা দেয়। নিজের বাড়িতে বৌকে ঘরে তুলতে দেয় না ছেলেরা। এক সময় ঘরে তুলতে দিলেও মৃধার মনটা অনেক কিছই ভাবে রাতের ঘুম না হওয়ায়। বৌ অন্তঃসত্তা হলে বৌ ও নতুন অতিথির জন্য আলাদা বাড়ি যার নাম প্রাণ কুঠির তৈরির আয়োজন। যাদের জন্য প্রাণ কুঠির নির্মাণ করতে শুরু করেন সেই বৌ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। সন্তানের অবস্থাও…..।

তা যাই হউক এত কিছুর পরও লেখক কিন্তু প্রেমহীন নন যা ‘মীরা এবং’ গল্পটি পড়লেই মনে হবে। একটা ছাব্বিশ বছরের দরিদ্র ঘরের বেকার ছেলের যা অবস্থা তাই ফুঁটে উঠে এই গল্পটিতে । মীরা একদিন চলে যায় বাবার চাকরির স্থান বদল ও তার উজ্জ্বল জীবনের প্রত্যাশায় ইউনিভার্সিটি পড়তে। এরপর মীরা চায় তাদের আবার দেখা হউক। সত্যিই কি তাদের আবার দেখা হয়? হয়ত পৃথিবীতে যারা মহান তারা অনেক কিছুই তুচ্ছ মনে করে নিজের দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে অন্যকে সুখী দেখতে চান। লেখক এই গল্পে তাই করেন।

আমাদের দেশের এক শ্রেণির মানুষ শিক্ষাকে নিয়ে করছে জমজমাট ব্যবসা। প্রশাসন নিশ্চুপ। নিশ্চুপ প্রগতিবাদী ভন্ডরা। কারা এর প্রতিবাদ করবে? প্রতিবাদীরাই ভুক্তভোগী।

বিবিসি বিড়ম্বনায় ফুটে উঠেছে সমাজের মানুষ বিরক্তকারী কীটদের আসল চেহারা। মানুষ কত নিষ্টুর, স্বার্থবাদী, ধান্দাবাজ, পরশ্রীকাতরতা তা প্রতিদন্ধী না পড়লেই বুঝা যাবে না।

আজ আমাদের দেশের, দেশের সাধারণ মানুষের উন্নতি না হলেও উন্নতির কমতি নেই নেতাদের। তারা সাধারণ জনগণকে বছরের পর বছর ঠকিয়ে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। এমনি বর্তমান রাজনীতির পেক্ষাপটে রচিত ‘ভকারু’ গল্পটি যেন গল্প নয় আমাদের দেশের রাজনীতি ও নেতাদের হুবাহু কপি।

শেষ গল্প একাব্বর আলীর পদ্মপুরাণ গ্রামের এক প্রতিচ্ছবির নাম। বাসলি নামের এক রোগের কবিরাজি করা অবস্থায় কবিরাজের ছেলে সাপের কামড় খেয়ে মারা যায়। কিন্তু তার আগে ঘটনা?

এরক নয়টি ভিন্ন স্বাদের নয়টি গল্পে সাজানো “কাঁটাতারে ঝুলে আছে ফেলানী”। গল্পগ্রন্থে লেখক সমাজের চোখে, দেশের চোখে, দেশের প্রগতিবাদী মানুষের চোখে বুড়ো অাঙ্গুল দেখিয়ে দিয়েছেন অতন্ত সাহসিকতায়। যা একজন বুদ্ধ পাঠক অবলীলায় স্বীকার করবে।

যারা ফেলানী সম্পর্কে জানতে চান, জানতে চান কুড়িগ্রামের রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্মান্ধতা আর সাধারণ মানুষের জীবনাচরণ তাদের বইটি পড়া আমি একান্ত প্রয়োজন। আপনি যদি বইটি না পড়েন তাহলে অনেক কিছুই মিস করবেন।

The post কাঁটাতারে ফেলানী ও আমাদের সমাজ appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>