তিস্তা Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=তিস্তা কুড়িগ্রাম জেলার তথ্য ও সংবাদ Tue, 06 Sep 2022 15:31:28 +0000 en-US hourly 1 https://www.ulipur.com/wp-content/uploads/2022/10/1665889308.png তিস্তা Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=তিস্তা 32 32 কুড়িগ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধে চলমান কাজ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক https://www.ulipur.com/?p=18887 Tue, 06 Sep 2022 15:31:27 +0000 https://www.ulipur.com/?p=18887 ।। নিউজ ডেস্ক ।। কুড়িগ্রামে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা ও ভাঙ্গন রোধে চলমান কাজ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বজলুর রশিদ। মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পরিদর্শনকালী তার সাথে ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পশ্চিম রিজিওন এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, উত্তারাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমিরুল হক ভুইয়া, রংপুর সার্কেলের-১ [...]

The post কুড়িগ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধে চলমান কাজ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা ও ভাঙ্গন রোধে চলমান কাজ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বজলুর রশিদ।

মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পরিদর্শনকালী তার সাথে ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পশ্চিম রিজিওন এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, উত্তারাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমিরুল হক ভুইয়া, রংপুর সার্কেলের-১ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খুশি মোহন, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ্ আল মামুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।

পরিদর্শন শেষে সদর উপজেলার ধরলা নদীর মোগলবাসা ঘাটে তিস্তার চলমান ভাঙ্গনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বজলুর রশিদ জানান, ইমারজেন্সি ওয়ার্কের ফান্ড দিয়ে স্থায়ীভাবে তিস্তার ব্যাপক ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব নয়। তবুও আমরা ভাঙ্গন রোধে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিস্তা নিয়ে ভালো স্টাডি হয়েছে, সরকারের বিবেচনায় আছে। সরকারের সিদ্ধান্ত আসলেই তিস্তা নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আশা ব্যাক্ত করেন তিনি।

এসময় তিনি আরো বলেন, কুড়িগ্রামে নদ-নদীর ভাঙ্গন রোধে ১৩টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের পাশাপাশি ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় আপদকালীন কাজও করা হচ্ছে। এছাড়া কাজে উৎসাহ দিতেই এলাকা পরিদর্শনে এসেছেন বলে জানান তিনি।

The post কুড়িগ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধে চলমান কাজ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
হাতিয়ায় ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন https://www.ulipur.com/?p=8355 Sun, 19 May 2019 05:54:08 +0000 https://www.ulipur.com/?p=8355 ।। আব্দুল মালেক ।।উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে উলিপুরের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে শুরু হয়েছে নদের তীব্র ভাঙন। গত এক সপ্তাহে কয়েক একর আবাদী জমি ও ভিটে মাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে কয়েকশ একর ফসলি জমিসহ ১৫ টি বসতবাড়ি। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ার গ্রামে ব্রহ্মপুত্র [...]

The post হাতিয়ায় ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
।। আব্দুল মালেক ।।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে উলিপুরের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে শুরু হয়েছে নদের তীব্র ভাঙন। গত এক সপ্তাহে কয়েক একর আবাদী জমি ও ভিটে মাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে কয়েকশ একর ফসলি জমিসহ ১৫ টি বসতবাড়ি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ার গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। সেই সাথে আবাদি জমি বসতভিটা ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে বিলীন হচ্ছে। তাছাড়া কয়েকশ একর ফসলি জমি ও ১৫ টি বসতবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। এসব ভিটেমাটি যে কোন মূহুর্তে নদীর পেটে চলে যাওয়ার আশংকা স্থানীয়দের।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কথা হয় ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল ছামাদের সাথে তিনি বলেন, কয়েকদিনের নদী ভাঙনে আমার ভিটে মাটিসহ এক একর ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। এছাড়াও আবুল হোসেন ,আব্দুল কাদের, মান্নার মিয়া, রহিম বাদশা, তৈয়ব আলীরসহ কয়েকটি বসতভিটা ও কাশিম আলীর ২৫ শতক, খেতাব সরকারের ৮০ শতক , আইয়ুব আলীর ৩০ শতক, নুর ইসলামের ৬০ শতকসহ একাধিক কৃষকের পাটক্ষেত হুমকির মুখে রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল হক, গফুর আলী, রাজু মিয়াসহ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা বলেন “দেখতে দেখতে নদী হামার সইক ভাঙ্গি নিয়ে যাবার নাগছে। বাড়ি ঘর কখন যে ভাঙ্গি নিয়ে যাইবে, সেই চিন্তায় দিশেহারা। শেষ সম্বল বলতে হামার কিছুই থাকপের নয়”।

এদিকে থেতরাই ইউনিয়নের দালাল পাড়া এলাকায় তিস্তা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বিএসসি জানান, জরুরী প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর ভাঙন রোধ করা না হলে কয়েকটি বাড়ি ও কয়েকশ আবাদী জমি নদী গর্ভে চলে যাবে। সেই সাথে হাতিয়া বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রটি ভাঙন কবলে পড়বে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের জানান, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হবে। উলিপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, জরুরী প্রকল্পের জন্য অর্থ চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। হাতে পেলে কাজ শুরু করব।

The post হাতিয়ায় ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
উত্তরাঞ্চলের দারিদ্র্য : উন্নয়নের ভ্রান্ত ডিসকোর্স https://www.ulipur.com/?p=7033 Wed, 03 Oct 2018 15:13:26 +0000 https://www.ulipur.com/?p=7033 মো. মোরশেদ হোসেন: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের দারিদ্র্য হতে পারে অর্থনীতির আলোচনায় নতুন ডিসকোর্স। দেশ ও অঞ্চলভেদে দারিদ্র্যের রয়েছে নানা স্বরূপ। বাংলাদেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে কাজ করছে সরকার, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বড় বড় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিদ, মানবতাবাদী কর্মী, এনজিওগুলো। ফলাফল হিসেবে কমছে দারিদ্র্য। বাংলাদেশের বিভিন্ন সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের উচ্চদারিদ্র্য রেখা অনুসারে [...]

The post উত্তরাঞ্চলের দারিদ্র্য : উন্নয়নের ভ্রান্ত ডিসকোর্স appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
মো. মোরশেদ হোসেন:
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের দারিদ্র্য হতে পারে অর্থনীতির আলোচনায় নতুন ডিসকোর্স। দেশ ও অঞ্চলভেদে দারিদ্র্যের রয়েছে নানা স্বরূপ। বাংলাদেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে কাজ করছে সরকার, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বড় বড় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিদ, মানবতাবাদী কর্মী, এনজিওগুলো। ফলাফল হিসেবে কমছে দারিদ্র্য। বাংলাদেশের বিভিন্ন সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের উচ্চদারিদ্র্য রেখা অনুসারে বাংলাদেশে যে দারিদ্র্যের হার ২০০০, ২০০৫ ও ২০১০ সালে ছিল যথাক্রমে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ, ৪০ শতাংশ ও ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ, তা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর অক্টোবর ২০১৭-এ প্রকাশিত Preliminary Report on Household Income and Expenditure Survey 2016 অনুসারে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। আবার একই পরিসংখ্যান অনুসারে জাতীয় পর্যায়ে দারিদ্র্য হার যেখানে উচ্চদারিদ্র্য রেখা অনুসারে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ, সেখানে সব বিভাগের মধ্যে রংপুর বিভাগে দারিদ্র্য হার সবচেয়ে বেশি ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ। উল্লেখ্য, Household Income and Expenditure Survey 2010 অনুযায়ী রংপুর বিভাগে ২০১০ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ। দেশের জাতীয় দারিদ্র্য হার যেখানে কমছে, সেখানে রংপুর বিভাগে দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক বিষয় এবং পরিসংখ্যানটা চমকে দেয়ার মতো। জেলাভিত্তিক দারিদ্র্য পরিসংখ্যান আরো ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্য সীমাভুক্ত ১০টি জেলার মধ্যে পাঁচটি উত্তরাঞ্চলের। এর মধ্যে কুড়িগ্রামে দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ, ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ। একটি জেলার ৭০ দশমিক ৮ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, ভাবতেই অবাক লাগে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি অবাক হতে হয় ২০১৪ সালে বিবিএস যে দারিদ্র্য মানচিত্র তৈরি করে, তাতে কুড়িগ্রামে দারিদ্র্যের হার ছিল ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ অর্থাৎ বেড়েছে দারিদ্র্য।

দারিদ্র্য বাড়ার বিষয়টা জন্ম দেয় নানা প্রশ্নের। এটা কি জরিপের কোনো সীমাবদ্ধতা, নাকি বাস্তবে এটা ঘটেছে। যদি বাস্তবে এটা ঘটে থাকে, তাহলে দেশের ৭ শতাংশের বেশি হারে প্রবৃদ্ধি, মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলসের সফল বাস্তবায়ন, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন, সোস্যাল সেফটি নেটের কার্যক্রম, স্বাধীনতা পূর্ব ও পরবর্তী সময় থেকে দেশী-বিদেশী এনজিওর এত দিনের কার্যক্রম, সরকারের এত মন্ত্রণালয়-অধিদপ্তর-দপ্তর-বিভাগের কার্যক্রম, সবই কি নিষ্ফল? সাধারণ দৃষ্টিতে দেখলে, বেড়েছে এ অঞ্চলের মানুষের আয়, মঙ্গার প্রকোপ নেই, রাস্তা-ব্রিজ- হয়েছে অনেক, বেড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা, বেড়েছে মানুষের সচেতনতা, শিক্ষার হার। তার পরও কেন এই চিত্র?

বাস্তবতা বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমানে দেশের প্রকৃত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যে সুফল, তা উত্তরাঞ্চলের জনগণ খুব বেশি পায়নি অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির সমবণ্টন হয়নি। বাংলাদেশের Accelerating Growth, Empowering Citizens শীর্ষক সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০১৬-২০২০) ‘‘Addressing the Challenge of Lagging Regions’’ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্ট বলা হয়েছে, বাংলাদেশের যে প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন হয়েছে, তা বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ হয়নি। ফলে দুটো ভিন্ন ধরনের অঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে— পশ্চাত্পদ অঞ্চল এবং অপেক্ষাকৃত সমৃদ্ধশালী অঞ্চল। এ অঞ্চলগুলোকে বঞ্চিত এলাকা এবং অবঞ্চিত এলাকা হিসেবেও দেখানো হয়েছে।

উত্তরাঞ্চলের মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা কর্মসংস্থানের অভাব। কৃষি ছাড়া দৃশ্যমান কোনো খাত সৃষ্টি হয়নি, যেখানে মানুষ কাজ করে আয় করতে পারে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষিতে জড়িত বেশির ভাগ মানুষ। ফলে ছদ্মবেশী বেকারত্ব অনেক বেশি অর্থাৎ এদের কৃষিতে প্রান্তিক উৎপাদন শূন্য। বড় বা মাঝারি শিল্প এ অঞ্চলে নেই বললে চলে। উত্তরাঞ্চলে কৃষিতে মজুরি বেড়েছে সত্য। কিন্তু সেই সঙ্গে অনেক বেড়েছে দ্রব্যমূল্য। নিত্যদিন পরিশ্রম করে যে আয়, তাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাতে পারে না পরিবারগুলো। বেশি পরিশ্রম, স্বাস্থ্য ঝুকি, পুষ্টির অভাবে অল্প সময়ে হারায় কর্মক্ষমতা। শুধু কায়িক পরিশ্রম করে স্বল্প মজুরিতে দারিদ্র্যের বৃত্ত ভাঙা সম্ভব কিনা, তা ভাবার বিষয়। উত্তরাঞ্চলের মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু পরিবেশ বিপর্যয়। বিশেষ করে বন্যা, নদীভাঙন প্রতি বছরই এ অঞ্চলের মানুষকে করছে দরিদ্র। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, যমুনা মানুষকে করে বাস্তুহারা। পরিবেশ বিপর্যয়ের শিকার হয়েও কেউ পায় না ক্লাইমেট চেঞ্জ ফান্ডের ক্ষতিপূরণ কিংবা কোনো সরকারি সহায়তা। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি স্থায়ীভাবে দারিদ্র্য দূরীকরণে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। অপ্রতুল আর্থিক কিংবা খাদ্য সহায়তা তাদের সপ্তাহ বা মাসের খাদ্য জোগান দিলেও দারিদ্র্য দূরীকরণ অসম্ভব। আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ড এতে সম্ভব নয়। ফলে স্থায়ীভাবে দারিদ্র্যের একটি সিলমোহর তাদের গায়ে লেগে যায়। এ থেকে উত্তরণ প্রচেষ্টা দেখা যায় না।

দেশের যে জেলাগুলোয় খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী দারিদ্র্য কম, তার অন্যতম হলো নারায়ণগঞ্জ জেলা। এখানে দারিদ্র্যের হার মাত্র ২ দশমিক ৬ শতাংশ। এখানকার বৈশিষ্ট্য হলো এটি শিল্প এলাকা। কিন্তু উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় বিড়ি, চালকল ইত্যাদি ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো শিল্পায়ন হয়নি। রংপুর অঞ্চলে শিল্পায়নে বাধার অন্যতম কারণ হলো জ্বালানি সমস্যা, পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ না থাকা। উত্তরা ইপিজেডে বিদেশী বিনিয়োগকারী না আসার কারণ হলো গ্যাস সরবরাহ না থাকা। দেখা যায়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অনেক শিল্পমালিক উত্তরাঞ্চলের। কিন্তু তারা উত্তরাঞ্চলে শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হয় না। কারণ হিসেবে উত্তরাঞ্চলের বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকা, জ্বালানি হিসেবে গ্যাস, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, অবকাঠামোগত সুবিধা, দক্ষ শ্রমিক না থাকা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ইত্যাদি নানা অসুবিধার কথা বলেন। এছাড়া এ অঞ্চলের মানুষ ব্যবসায়িক ঝুঁকি গ্রহণে অনেকটা বিমুখ। উত্তরাঞ্চলে দেশী-বিদেশী এনজিওর কর্মকাণ্ড আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। স্বাধীনতাপূর্ব ও স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে এ অঞ্চলে বিশেষ করে কুড়িগ্রামের জনগণের দারিদ্র্য হ্রাসে তারা নানা কর্মকাণ্ড করেছে। কিন্তু এত বছর পরও এ অঞ্চলে সর্বোচ্চ দারিদ্র্য এবং দারিদ্র্য বৃদ্ধি তাদের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকাণ্ডের ব্যর্থতাকে সামনে নিয়ে আসে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এনজিওগুলোর ক্ষুদ্রঋণের উচ্চ সুদের হারের কারণে অনেক মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এক এনজিওর ঋণ শোধ করতে আরেক এনজিও থেকে ঋণ নিচ্ছে। ফলে ঋণের চক্র হতে বের হতে পারছে না তারা।

উত্তরাঞ্চলের কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে (বয়স ১৫ বা এর বেশি) ৮৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ পুরুষ শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ করে কিন্তু নারীদের মধ্যে মাত্র ৩৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ করে (বিবিএস ২০১১)। রংপুর বিভাগ হতে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের হারও কম। ২০০৫ হতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিদেশে মোট কর্মসংস্থান হওয়া ১ কোটি ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৮ জনের মধ্যে রংপুর বিভাগ হতে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৭ হাজার ৫৭৪ জনের অর্থাৎ ১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আবার বিএমইটির পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০১৬ সালে যেখানে মোট রেমিট্যান্সের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের অর্জন ৪১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ঢাকা বিভাগের অর্জন ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশ, সেখানে রংপুর বিভাগের অর্জন মাত্র দশমিক ৮৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও এখনো নারী শিক্ষার হারে পিছিয়ে আছে (৪৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ)। অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা বলতে যা বোঝায়, এখনো শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষায় নিট এনরোলমেন্ট বেশি হলেও ড্রপ আউট বেশি। মাধ্যমিক ক্ষেত্রে এনরোলমেন্ট কম। টারশিয়ারি পর্যায়ে এনরোলমেন্ট আরো কম। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে মানসম্পন্ন স্কুল কম থাকায় অভাব রয়েছে মানসম্পন্ন শিক্ষার। আর্থিক কারণ, প্রয়োজনীয় সুযোগ- সুবিধার অভাব, ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা, প্রতিকূল পরিবেশ ইত্যাদি কারণে উচ্চশিক্ষায় এ অঞ্চলের জনগণ অনেক পিছিয়ে। স্বাস্থ্যসেবার আপাত উন্নয়ন হলেও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রাথমিক চাহিদা মেটালেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের প্রয়োজনে মানুষকে ছুটতে হয় রংপুর শহরের মেডিকেল কলেজ কিংবা প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডাক্তারদের চেম্বারে। সরকারি হাসপাতালে অপ্রতুল সেবা, স্বল্প অর্থ বরাদ্দ, প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্টের অভাব, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবই এর মূল কারণ।

দারিদ্র্য, লৈঙ্গিক সমতা ও নারী ক্ষমতায়নের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। আবার নারী দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে বহুমাত্রিকতা। রংপুর বিভাগের দরিদ্রের মধ্যে নারীরা নারী হিসেবে বেশি দারিদ্র্যের শিকার। বিশেষ করে চরাঞ্চলের হতদরিদ্র নারীদের জীবনকথা যেন বঞ্চনা আর দীর্ঘশ্বাসের শোকগাথা। ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা-ধরলা-যমুনা তীরে যে জনপদ; চরপ্রধান গ্রাম, যেখানে ৬৮ শতাংশ মানুষ ভূমিহীন, কর্ম-খাদ্য সংকট সেখানেই। আজ হয়তো মঙ্গা নেই কিংবা কমে গেছে, কিন্তু চরাঞ্চলের জনগণের স্থায়ী কর্মসংস্থান হয়নি।

পশ্চাত্পদতা দূরীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হলো মানবসম্পদ উন্নয়ন। এ অঞ্চলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। আঞ্চলিক বৈষম্য হ্রাস করতে গুণগত শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। মানবসম্পদ উন্নয়নের কৌশল হিসেবে পশ্চাত্পদ অঞ্চলে টারশিয়ারি পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎসাহিত করতে হবে। টারশিয়ারি পর্যায়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে রংপুর বিভাগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র দুটি, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় একটি, কারিগরি শিক্ষার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। যেসব চরাঞ্চলে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই, সেখানে বিদ্যালয় স্থাপন করা প্রয়োজন। এছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন ও মেয়েদের শিক্ষার ওপর গুরুত্ব বাড়াতে হবে।

রংপুর বিভাগ হতে শ্রমিক অভিবাসনের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। রেমিট্যান্সকে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে হবে। রংপুর বিভাগ হতে বৈদেশিক কর্মসংস্থানে অধিক সংখ্যক লোক পাঠাতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য বিশেষ দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি এবং ঋণ সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে দক্ষতা চাহিদা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে পশ্চাত্পদ অঞ্চলে বিশেষ প্রযুক্তি ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। পশ্চাত্পদ অঞ্চলের সম্ভাব্য মাইগ্রেন্টদের সহায়তার জন্য বিশেষ আর্থিক সহায়তা স্কিম পরিচালনা করতে হবে। পশ্চাত্পদ অঞ্চলে বেসরকারি সহায়তা নিয়ে ফরেন ইমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে সম্ভাব্য মাইগ্রেন্টদের লজিস্টিক সহায়তা এবং কারিগরি পরামর্শ দেয়া যেতে পারে। এ অঞ্চলের বৈদেশিক কর্মসংস্থান বাড়িয়ে প্রবাসী উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা প্রয়োজন।

পশ্চাত্পদ রংপুর বিভাগে অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টির জন্য মূল প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এর জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে রংপুর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। যোগাযোগ ও যাতায়াতের সময় কমিয়ে আনতে হবে। জ্বালানি সমস্যা দূরীকরণে এখানে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। গ্যাস সরবরাহ না হওয়া পর্যন্ত ফার্নেস অয়েল ও বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রদান প্রয়োজন। রংপুর অঞ্চলে প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দ্রুত স্থাপন করতে হবে। রংপুর বিভাগে আইটি পার্ক স্থাপন করতে হবে। আইটি পার্ক, আইসিটি সহায়তা, ইনকিউবেশন সেন্টার হলে শিক্ষিত তরুণ জনগোষ্ঠী কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে। রংপুর অঞ্চলের শিল্পের বিকাশে শিল্প স্থাপন-সংক্রান্ত ব্যাংকঋণ সহজসাধ্য করতে হবে।

‘ইকুইটি’ ও ‘কোল্যাটারাল সিকিউরিটি’র পরিবর্তে আবেদনকারীর সামাজিক ব্যাকগ্রাউন্ড বা পটভূমি ও প্রকল্পটি অর্থনৈতিকভাবে টেকসই কিনা, তা বিবেচনায় ঋণ প্রদান করা। প্রকল্প ও চলতি মূলধনের জন্য সুদের হার ১ ডিজিট করা প্রয়োজন। দ্রুত ঋণ-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দেয়া এবং অর্থ ছাড় করা। টিআইএন ও ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা ও তা বাস্তবায়ন করা। ভ্যাটের পরিধি বিস্তৃত করা এ অঞ্চলে বিনিয়োগ সহায়তা দিতে আলাদা শিল্পনীতি, করনীতি, ভ্যাট নীতি, শুল্কনীতি ও ঋণনীতি ঘোষণা করতে হবে। রংপুর অঞ্চলের শিল্পে আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষজ্ঞ ও আইসিটির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এ অঞ্চলের শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের জন্য শিল্প সংরক্ষণ নীতি গ্রহণ করতে হবে। শিল্পের মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির ওপর কাস্টমস শুল্ক কম ধরা। শিল্পের প্রাথমিক উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট হার কমানো। রংপুর অঞ্চলের শিল্পের ট্যাক্স হলিডের মেয়াদ ১০ বছর করা। শিল্পের জন্য প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি। এজন্য বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ ও স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট সৃষ্টি করতে হবে। দুর্নীতি দূর করা এবং গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে পণ্যের উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ, মান উন্নয়ন, মার্কেটিং পলিসি নির্ধারণ, বিজ্ঞাপন প্রচার ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে। ট্রেডিং খাতে বিনিয়োগের পাশাপাশি শিল্প ও সেবা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ অঞ্চলে বেসরকারি খাত বিনিয়োগে উৎসাহিত না হলে প্রথম দিকে সরকারি সহায়তা দেয়া প্রয়োজন। এখানে পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুবিধাসহ ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপন করতে হবে, যাতে উদ্যোক্তারা সুবিধা পান। প্রয়োজন রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা ও এডিপিতে বাজেট বরাদ্দ রাখা এবং রংপুর ওয়াসা গঠন করা ও এডিপিতে বাজেট বরাদ্দ রাখা, যা এসডিজিকে ত্বরান্বিত করবে। রংপুর বিভাগে কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, অকৃষি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। রংপুর অঞ্চলে অকৃষিমূলক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা বাড়াতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান যেমন— ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী করতে হবে, যাতে সরকারের গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচি সফল হয়। এ অঞ্চলের পরিবর্তনের লক্ষ্যে ডিজিটাল সুবিধা প্রাপ্তির জন্য ইন্টারনেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মডেম, রাউটার ইত্যাদির ভ্যাট কমানো প্রয়োজন। প্রাইভেট সফটওয়্যার পার্কের ট্যাক্স হলিডে ২০ বছর করা প্রয়োজন। সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প তৈরিতে করহার শূন্য করা প্রয়োজন। ই-কমার্সের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার এবং যেসব সফটওয়্যার বাংলাদেশে তৈরি হয়, তা আমদানিতে ২৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা প্রয়োজন। বন্যা, নদীভাঙন ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য নদীতে প্রয়োজন ড্রেজিং।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এ আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করার কৌশল ও নীতি হলো ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে পিছিয়ে থাকা অঞ্চলগুলোর উন্নয়নের জন্য নিয়মিত এডিপির অতিরিক্ত একটি নির্দিষ্ট শতাংশীয় হারে গ্রহণযোগ্য এডিপির বরাদ্দ দেয়া’। পিছিয়ে পড়া অঞ্চল হিসেবে রংপুর বিভাগে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে বিনিয়োগ সুবিধা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি উপযোগ অভিগম্যতা, সেবায় অভিগম্যতা বাড়াতে হবে। রংপুর বিভাগের প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন— কয়লা সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। বঞ্চিত এলাকায় বেশি পরিমাণ সরকারি ব্যয় করা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ বাড়ানো উচিত। নিম্ন আয় ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য উৎপাদনশীল সম্পদের ওপর মালিকানা এবং আয়-বর্ধনমূলক কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত।

বাংলাদেশের বিভাগগুলোর মধ্যে রংপুর বিভাগ সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার, দারিদ্র্য বৃদ্ধি এ অঞ্চলের নতুন বিষয়। অনেক সভা, সেমিনার, লেখালেখি ও আলোচনা হওয়ার পরও উন্নয়ন বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেই। তার ওপর বাড়ছে দারিদ্র্য। এখন দারিদ্র্য বৃদ্ধি রোধে প্রয়োজন সরকারের একটি উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরি এবং তা বাস্তবায়নে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা।

লেখক: বিভাগীয় প্রধান, অর্থনীতি বিভাগ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

সুত্র:বণিক বার্তা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮

The post উত্তরাঞ্চলের দারিদ্র্য : উন্নয়নের ভ্রান্ত ডিসকোর্স appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে প্লাবন https://www.ulipur.com/?p=6520 Fri, 06 Jul 2018 10:01:33 +0000 http://www.ulipur.com/?p=6520 নিউজ ডেস্ক: উজান থেকে নেমে আসা পানি ও পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, গঙ্গাধরসহ সবকটি নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীর অববাহিকার অন্তত ৪০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি [...]

The post কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে প্লাবন appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
নিউজ ডেস্ক:
উজান থেকে নেমে আসা পানি ও পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, গঙ্গাধরসহ সবকটি নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীর অববাহিকার অন্তত ৪০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে নদীর তীরবর্তী প্রায় ১৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে পটল, ঢেঁড়স, মরিচ ও শসাসহ বিভিন্ন সবজিক্ষেত। নিম্নাঞ্চলের কাঁচা সড়কে পানি উঠে যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

সদর উপজেলার ধরলা নদীর অববাহিকার মাঝেরচর গ্রামের বাবলু মিয়া জানান, ধরলার পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে চরাঞ্চলের সব ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করবে।

অন্যদিকে গতকাল সকাল থেকেই দুধকুমার নদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। এতে নদের দুকূল ছাপিয়ে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। প্লাবন দেখা দিয়েছে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শিলকুড়ি ইউনিয়নের চর উত্তর টিলাই, উত্তর ধলডাঙ্গা, দক্ষিণ ধলডাঙ্গা, উত্তর সাতগোপাল, বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের চর বলদিয়া, ভরতের ছড়া, পাইকের ছড়া ইউনিয়নের পাইকের ছড়া, সাট পাইকের ছড়া, হ্যালোডাঙ্গা, তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ তিলাই, চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর, চর ভুরুঙ্গামারী, আন্ধারীর ঝাড় ইউনিয়নের চর ভাউরাকুটি, চর বারইটারী, বারাইটারী ও ভুরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের চর নালেয়াসহ প্রায় ২৫টি গ্রামে। এছাড়া নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর নুনখাওয়ার কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চলেও পানি ঢুকে পড়ছে।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশরী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টায় ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ২৯ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৩৩ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৪০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।

সূত্র: বণিক বার্তা

The post কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে প্লাবন appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
উলিপুরে তিস্তার ভাঙনে শতাধিক পরিবার গৃহহীন https://www.ulipur.com/?p=6493 Tue, 03 Jul 2018 16:36:06 +0000 http://www.ulipur.com/?p=6493 নিউজ ডেস্ক: ভাঙছে নদী। বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ীসহ আবাদি জমি। ভাঙনরোধে পাউবো কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় গত ২ দিনের ব্যবধানে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে উপজেলার হোকডাঙ্গার হিন্দু পাড়া ও ডাক্তার পাড়া গ্রামের ৫০টি পরিবারসহ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে সদ্য নির্মিত বাঁধটিসহ ৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। অবিরাম ভাঙনের মুখে [...]

The post উলিপুরে তিস্তার ভাঙনে শতাধিক পরিবার গৃহহীন appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
নিউজ ডেস্ক:
ভাঙছে নদী। বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ীসহ আবাদি জমি। ভাঙনরোধে পাউবো কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় গত ২ দিনের ব্যবধানে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে উপজেলার হোকডাঙ্গার হিন্দু পাড়া ও ডাক্তার পাড়া গ্রামের ৫০টি পরিবারসহ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে সদ্য নির্মিত বাঁধটিসহ ৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। অবিরাম ভাঙনের মুখে ঘরবাড়ী সরাতে হিমশিম খাচ্ছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন। গত কয়েকদিন থেকে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। সেইসাথে পাল্লা দিয়ে ভাঙছে নদী।

জেলার উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের তিস্তার ভাঙন কবলিত হোকডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদী ভাঙনের ভয়াবহ রুপ। চোখের সামনে ভেঙে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল পদ্ম বালা বর্মনীর বসত ভিটা। নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে দালাল পাড়া, কড়াই পাড়া গ্রাম। তিস্তা নদী অববাহিকার গুনাইগাছ ইউনিয়নের নেফরা, নন্দু নেফরা, বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরা, বাধেঁর বাজার, বগলা কুড়া ও সাতালস্কর গ্রামেও ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত নাগড়াকুড়া টি-বাঁধসহ ৫টি গ্রাম ও পাইকর পাড়া শ্যামলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২টি মন্দির। হোকডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক আব্দুল বারী সহ ভুক্তভোগি অনেকেই জানান, গতবছর থেকে এসব এলাকায় ভাঙন শুরু হলেও কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় এ বছর ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান তারা।

থেতরাই ইউনিয়নের ডাক্তার পাড়া গ্রামের বাসিন্ধা সংরক্ষিত মহিলা সদস্য তারামনি রাণী জানান, ৭ দিন ধরে ওই এলাকায় তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ২ দিনের ভাঙ্গনে তার বাড়িসহ পুরো হিন্দু পাড়া ও ডাক্তার পাড়া গ্রাম দু’টি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমার বসতবাড়িও নদীতে চলে গেছে।

চলতি ভাঙনে শতাধিক পরিবার ও গত বছর ভাঙনে ৫০ পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে আরো ৫০টি পরিবার। ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষজন দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। হিন্দু পাড়া ও ডাক্তার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৬৫), মনোরাম চন্দ্র বর্মন (৭৫) ও করিমল চন্দ্র বর্মন (৫৫) জানান, চলতি ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়েছেন। অর্থের অভাবে বাড়িঘর করতে পাচ্ছেন না। এলাকাবাসির দাবি রিলিপ চাই না, ভাঙনরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা চাই।

থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আইযুব আলী সরকার জানান, ভাঙনরোধে আবেদন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা চাওয়া হয়েছে, তালিকা পেলে ক্ষতিপ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, ওই এলাকার ভাঙ্গনরোধে ৩৫ কি.মি. এলাকায় ৭টি ‘টি বাঁধ’ নির্মাণের জন্য ২শ’ ৪২ কোটি টাকার প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে প্রকল্প অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে।

The post উলিপুরে তিস্তার ভাঙনে শতাধিক পরিবার গৃহহীন appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
উলিপুরে বজ্রপাতে গৃহবধুর মৃত্যু https://www.ulipur.com/?p=6327 Thu, 07 Jun 2018 18:17:25 +0000 http://www.ulipur.com/?p=6327 আ.মালেক: উলিপুরে তিস্তা নদীর চরে বজ্রপাতে এক গৃহবধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, গতকাল সকাল ৯ টার দিকে বজরা ইউনিয়নের তিস্তা নদী বিচ্ছিন্ন চর সাতালস্কর গ্রামের ছালেহা বেগম ঝড়-বৃষ্টির সময় উঠোন থেকে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সে ঐ গ্রামের সেলিম উদ্দিন কাউয়ার স্ত্রী এবং বাউল শিল্পী শাপলা সরকারের [...]

The post উলিপুরে বজ্রপাতে গৃহবধুর মৃত্যু appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
আ.মালেক:
উলিপুরে তিস্তা নদীর চরে বজ্রপাতে এক গৃহবধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, গতকাল সকাল ৯ টার দিকে বজরা ইউনিয়নের তিস্তা নদী বিচ্ছিন্ন চর সাতালস্কর গ্রামের ছালেহা বেগম ঝড়-বৃষ্টির সময় উঠোন থেকে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
সে ঐ গ্রামের সেলিম উদ্দিন কাউয়ার স্ত্রী এবং বাউল শিল্পী শাপলা সরকারের মা।

The post উলিপুরে বজ্রপাতে গৃহবধুর মৃত্যু appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
উলিপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ২ জনের মৃত্যু https://www.ulipur.com/?p=4113 Mon, 14 Aug 2017 17:25:25 +0000 http://www.ulipur.com/?p=4113 আব্দুল মালেকঃ বন্যা পরিস্থিতির মারাত্বক অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদ সীমার ৭৭ সেঃ মিটার উপর এবং ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি সামান্য কমলেও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে  নদীর  অববাহিকার সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, বুড়াবুড়ি, হাতিয়া, দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরাসহ ৮টি ইউনিয়নের শতাধিক চর ও দুই শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে [...]

The post উলিপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ২ জনের মৃত্যু appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
আব্দুল মালেকঃ
বন্যা পরিস্থিতির মারাত্বক অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদ সীমার ৭৭ সেঃ মিটার উপর এবং ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি সামান্য কমলেও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে  নদীর  অববাহিকার সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, বুড়াবুড়ি, হাতিয়া, দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরাসহ ৮টি ইউনিয়নের শতাধিক চর ও দুই শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় ২৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এদিকে উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ফকির মোহাম্মদ চরের কৃষক বানভাসা (৬৫) ও হাতিয়া ইউনিয়নের উচা ভিটা গ্রামের মিষ্টার আলীর পূত্র নাজমুল হক (৪) বন্যার পানিতে ভেসে নিখোঁজ হয়েছেন।

বন্যায় উপজেলার কয়েক হাজার ঘরবাড়ী, রাস্তাঘাট, ১০ হাজার হেক্টর রোপা আমন, বীজ তলা পানিতে ডুবে গেছে ও ১৬৫ টি পুকুরের প্রায় ৩৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। চলতি বছরে মাটিভরাটকৃত ৬টি আশ্রায়ন কেন্দ্র ৩/৪ ফুট  পানির নীচে থাকায় চরের মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারছেন না। চর এলাকার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।

হাঁসখাওয়া ব্রীজ ভেঙ্গে গেলে পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া বাড়ী রক্ষার চেষ্টা করছে এলাকাবাসী

বন্যার পানির তোড়ে বজরা হাঁসখাওয়ার ব্রীজ ও রাস্তা ভেঙ্গে কাশিম বাজারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে নতুন করে পূর্ববজরা, খামার বজরা ও কালপানিবজরা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। থেতরাই ও দলদলিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি মানুষগুলো নিরাপদ আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটে পড়েছে।

আজ সোমবার উপজেলার দলদলিয়া, থেতরাই, বজরা, ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে পানিবন্দি মানুষজন গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিয়ে বাঁধের রাস্তাসহ উচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে। বানভাসি মানুষ তাদের গবাদি পশু নিয়ে চরম দুভোর্গে পড়েছে।

দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান মুন্সি বলেন, এবারের বন্যা ৮৮ সালের বন্যাকেও হার মানিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দূর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত ৫২ মেঃ টন চাল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

The post উলিপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ২ জনের মৃত্যু appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
উলিপুরে বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি https://www.ulipur.com/?p=4098 Sun, 13 Aug 2017 12:39:13 +0000 http://www.ulipur.com/?p=4098 আব্দুল মালেকঃ ব্রহ্মপূত্র, তিস্তা, দুধকুমর ও ধরলা নদীর বানের পানি উপজেলাকে আষ্টেপৃষ্টে ঘিরে ফেলেছে। এক রাতের ব্যবধানে ৪টি নদ-নদীর বানের পানিতে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, তার ইউনিয়ন ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্টিত। ধরলা নদীর পানি স্বরণ কালের ভয়াবহ আকার ধারন করায় তার ইউনিয়নের [...]

The post উলিপুরে বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
আব্দুল মালেকঃ
ব্রহ্মপূত্র, তিস্তা, দুধকুমর ও ধরলা নদীর বানের পানি উপজেলাকে আষ্টেপৃষ্টে ঘিরে ফেলেছে। এক রাতের ব্যবধানে ৪টি নদ-নদীর বানের পানিতে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, তার ইউনিয়ন ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্টিত। ধরলা নদীর পানি স্বরণ কালের ভয়াবহ আকার ধারন করায় তার ইউনিয়নের ২২ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চরম আকার ধারন করছে। ব্রহ্মপূত্র বিচ্ছিন্ন সাহেবের আলগা ইউনিয়নের ৫২ টি চর তলিয়ে যাওয়ায় ১৫ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বিএসসি জানান, চর গুজিমারী, চর দাগারকুটি, বাবুরচর, গাবুরজান, নয়াডারা, শ্যামপুর, তাঁতিপাড়া, হাতিয়া ভবেশ, অনন্তপুরসহ নদ অববাহিকার বেশিরভাগ গ্রাম তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দলদলিয়া ইউনিয়নের চর রতিদেব, ঠুটাপাইকর, চর ঘাটিয়ালপাড়া, কর্পূরাখাস, চর অর্জুন, অর্জুন, লালজুম্মা, চাপড়ারপাড়, রেডক্রস, বসনিয়াপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ঠুটাপাইকর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কর্পূরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঠুটাপাইকর উচ্চ বিদ্যালয়সহ ঠুটাপাইকর বাজার পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব গ্রামের বেশির ভাগ রাস্তা তলিয়ে যাওয়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান মুন্সি জানান।

পানিতে তলিয়ে আছে উপজেলার কর্পূরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়

গতকাল রোববার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হায়দার আলী মিঞা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বন্যা কবলিত দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিদর্শন করে দূর্গত মানুষের ত্রাণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। বজরা ইউনিয়নের সাদুয়াদামার হাট, বিরহিমচর, পূর্ববজরা, চর বজরা, খামার বজরা গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ১৫হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

বজরা কাশিমবাজার সড়ক যেকোন মহুর্তে ভেঙ্গে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। গুনাইগাছ ইউনিয়নের টিটমা, কাজিরচক, সন্তোষ অভিরাম, শুকদেবকুন্ড, রাজবল্ল গ্রামের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। থেতরাই ইউনিয়নের জুয়ান সতরা, খারিজা লাটশালা, চর গোড়াইপিয়ার, রামনিয়াশা, গোড়াইপিয়ার মধ্য চর, চর হোকডাঙ্গা গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

বন্যা কবলিত এলাকার অনেক কৃষকের পাটজাগ পানির তোড়ে ভেসে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার অশোক কুমার রায় জানান, উপজেলার ১০ হাজার ১ শত হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত, ১ শত হেক্টর জমির বীজতলা ও ২ ’শ হেক্টর জমির শাক-সবজি তলিয়ে গেছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, উপজেলার ২৩ হেক্টর জমির ১৬৫ টি পুকুরের ৩৫ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার খন্দকার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল রোববার পর্যন্ত ৮ ইউনিয়নে ২৬ মেঃ টন খয়রাতি চাল বিতরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিরিা বলেন, দূর্গত মানুষের তুলনায় ত্রাণ সহায়তা খুবই অপ্রতুল।

The post উলিপুরে বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>