বাংলা নববর্ষ Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=বাংলা-নববর্ষ কুড়িগ্রাম জেলার তথ্য ও সংবাদ Thu, 14 Apr 2022 08:17:09 +0000 en-US hourly 1 https://www.ulipur.com/wp-content/uploads/2022/10/1665889308.png বাংলা নববর্ষ Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=বাংলা-নববর্ষ 32 32 উলিপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা https://www.ulipur.com/?p=16999 Thu, 14 Apr 2022 08:17:08 +0000 https://www.ulipur.com/?p=16999 ।। নিউজ ডেস্ক ।। উলিপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠ থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মাঠে এসে শেষ হয়। এরপর উপজেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে গ্রাম [...]

The post উলিপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠ থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মাঠে এসে শেষ হয়। এরপর উপজেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হাড়ি ভাঙ্গা খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুভাষ চন্দ্র সরকার, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরকার, উলিপুর এম এস স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম সরদার,উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. সখিনা বেগম, উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির, উলিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক রুহুল আমিন, উলিপুর বণিক সমিতির সভাপতি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা, কৃষক প্রতিনিধি পার্থ সারথি সরকার প্রমুখ।

//নিউজ/উলিপুর//মালেক/এপ্রিল/১৪/২২

The post উলিপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
বাংলা নববর্ষের ইতিহাস https://www.ulipur.com/?p=6001 Sat, 14 Apr 2018 11:31:19 +0000 http://www.ulipur.com/?p=6001 হাফিজুর রহমান সেলিম: সভ্যতার বিকাশের আদি যুুগ থেকেই মানুষ কাল বা সময় বিভাজনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসছে। সে প্রয়োজনের তাগিদেই বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে বছর, মাস, সপ্তাহ ইত্যাদি গণনার প্রথা প্রচলিত হয়। তারই ফলে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন অব্দের প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন অব্দের উদ্ভব হয়। বাংলায় বিভিন্ন সময়ে আমরা বিভিন্ন [...]

The post বাংলা নববর্ষের ইতিহাস appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
হাফিজুর রহমান সেলিম:
সভ্যতার বিকাশের আদি যুুগ থেকেই মানুষ কাল বা সময় বিভাজনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসছে। সে প্রয়োজনের তাগিদেই বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে বছর, মাস, সপ্তাহ ইত্যাদি গণনার প্রথা প্রচলিত হয়। তারই ফলে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন অব্দের প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন অব্দের উদ্ভব হয়। বাংলায় বিভিন্ন সময়ে আমরা বিভিন্ন অব্দের প্রচলন লক্ষ্য করেছি। যেমন-মল্লাব্দ, শকাব্দ, লক্ষনাব্দ, পালাব্দ, নশরত, শাহী সন, চৈতন্যাব্দ ইত্যাদি লক্ষণীয় বিষয়, এসব অব্দ প্রচলনের পিছনে রাজ রাজড়ার নাম জড়িত রয়েছে। কিন্তু বঙ্গাব্দ বা বাংলা সন প্রচলনের পিছনে যারই অবদান থাকুক না কেন, এর নামের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে বাঙ্গালী জাতির নাম। সুতরাং বাংলা সন হচ্ছে বাঙালী জাতির একান্ত নিজস্ব অব্দ।

১৫৭৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ (সুব বাঙ্গালী) মুঘল সাম্রাজ্যের শাসন ভূক্ত হয়। সামাজিক ক্ষেত্রে ও ফসলের মতো মওসুমের দিকে লক্ষ্য রেখে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে হিজরী সনের পরিবর্তে ঋতুভিত্তিক সৌরসনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তখনকার প্রচলিত হিজরী সনকে ‘ফসলী সন’ হিসাবে চালু করার মাধ্যমে বর্তমান বাংলা সন বঙ্গাব্দের জন্ম হয়।

১২০১ খ্রিষ্টাব্দে বখতিয়ার খিলজীর বঙ্গ জয়ের পর মুসলমান শাসন আমলে বাংলাদেশ তৎকালীন প্রচলিত শকাব্দ ও লক্ষনাব্দ সনের পাশাপাশি শাসনতান্ত্রিক কর্মকা-ে হিজরী সনের প্রচলন শুরু হয় এবং ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ রাজত্বকালের পুর্ব পর্যন্ত হিজরী সনই প্রচলিত ছিল। মাঝে সম্রাট আকবরের রাজত্ব কালের (১৫৫৬-১৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে) কিছু সময় ব্যতিরেকে বাদশাহি আমলে সব সময় শাসন কার্যে হিজরী সনই বহাল ছিল।

সন শব্দটি আরবী থেকে আগত, অর্থ-বর্ষ, বর্ষপূঞ্জি-বছরের দিনক্ষণের বিবরণ। আর বাংলা সন নিয়ে রাজা শশাঙ্ক (১৯৩-৬৩০), সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ (১৪৯৩-১৫১৯) এবং সম্রাট আকবরের মধ্যে কে বাংলা সনের প্রবর্তক সে। বিষয়টি নিয়ে ঘোরতর বিতর্ক আছে। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও প-িত মনে করেন যে মহামতি আকবরই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে বাংলা সন প্রবর্তন করেন। তবে এই মতের বিরোধীদের মধ্যে প্রধান হলেন সুলতানী আমলের ইতিহাসকার অধ্যাপক সুখময় মুখোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেনঃ বঙ্গাব্দের উদ্ভব কীভাবে হয়েছিল, সে প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাওয়া যায় না। সাম্প্রতিক কালে এ বিষয়ে একটা মত চালু হয়েছে। সেটি এই-আগে এদেশে সবাই হিজরী সন ব্যবহার করত; ফলে ফসল কাটার খুব অসুবিধা হতো, কারণ বাকীরা আগের বছর যে তারিখে ফসল কেটেছিল, পরের বছর সে তারিখ ১১ দিন এগিয়ে গেছে। তাই আকবর হিজরী যে সাল তখন ছিল সেই সময় থেকেই এক সৌর সংবত প্রবর্তন করেন। এটিই আমাদের বঙ্গাব্দ। এই মতটি এখন বহুল প্রচার লাভ করেছে এবং অনেকে একে ঐতিহাসিক সত্য বলেও মনে করেছেন। কিন্তু এই মত একেবারে কাল্পনিক। কারণ ঃ

১. আকবরের সময়কার প্রামানিক ইতিহাস গ্রন্থ আইন-ই আকবরী বা আকবর নামাতে অথবা অন্যান্য সমসাময়িক ঐতিহাসিকদের লেখা বই গুলিতে কোথাও আকবর কর্তৃক হিজরীকে সৌর বৎসরে পরিবর্তিত করার উল্লেখ পাওয়া যায় না।

২. আকবরের আমলে শুধু যে হিজরীই ব্যবহৃত হতো তাই নয়, হিন্দুরা শকাব্দ, বিক্রম, সংবত প্রভৃতি ব্যবহার করতেন। মুসলমানদের অনেকেই ফার্সী পঞ্জিকা ব্যবহার করতেন, এ সমস্তরই বছর ৩৬৫দিনের সৌর বছর।

৩. চাষীরা তারিখ অনুসারে ফসল কাটে না, তারা নির্দিষ্ট ঋতুতে ফসল কাটে। সুতরাং তাদের মধ্যে হিজরীকে সৌর সংবতের পরিবর্তিত করার কোনো কারণ নেই। হিজরী থেকে বঙ্গাব্দ হয়েছে এই মত এসেছিল, কয়েকজন আধুনিক ঐতিহাসিকের মাথা থেকে এদের মধ্যে যার কন্ঠস্বর সবচেয়ে জোরালো ছিল, তাঁর নাম কে. পি. জয়সোয়াল। প্রধানত তারই প্রচারের ফলে একটি কাল্পনিক মত আজ ঐতিহাসিক সত্যের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। কিন্তু এই কাল্পনিক মতের ভিত্তি কী? ভিত্তি একটি তুচ্ছ বিষয়। সেটি হল এই আকবরের সিংহাসন আরোহনের বছর ছিল ১৫৫৬ খ্রিঃ বা ৯৬৩ হিজরী এবং ৯৬৩ বঙ্গাব্দের সমান। এই থেকেই এরা স্থির করলেন যে হিজরী থেকেই বঙ্গাব্দ চালু হয়েছে এবং তা চালু করেছিলেন আকবর।

‘যতীন্দ্রমোহন ভট্রাচার্য’ এই অঞ্চলের সাল-তারিখ সম্বন্ধে একজন বড় বিশেষজ্ঞও ছিলেন। বঙ্গাব্দ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন। ‘সুলতান হোসেন শাহের সময় এই সন প্রচলিত হয় (বাংলা পুঁিথর তালিকা সমন্বয় (১ম খ-, পৃষ্ঠা-৩৭৮)। কোন বিষয় থেকে যতীন্দ্র বাবু এই সিন্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, তা তিনি উল্লেখ করেননি। সে জন্যই, একে গ্রহণ করতে আমাদের অসুবিধা আছে। এটা ঠিক যে, কোনো কোনো পুঁথিতে বঙ্গাব্দকে যবনে নৃপতে শকাব্দ’ বলা হয়েছে, রাম গোপাল দাসের রসকল্প বল্লীর পুঁথিতেও বঙ্গাব্দকে ‘যাবনী বৎসর’ বলা হয়েছে। কিন্তু এর থেকেই মনে করা চলে না যে জনৈক মুসলমান রাজা বঙ্গাব্দ প্রবর্তন করেছিলেন এবং তিনি হোসেন শাহ (মুখময় মুখোপাধ্যায়, এক্ষণ, শারদীয় সংখ্যা-১৪০৯)।

ঐতিহাসিক সুখময় মুখোপাধ্যায় ওপরে যেসব যুক্তি উপস্থাপন করেছেন তা প্রনিধানযোগ্য। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত যে উপসংহার টেনেছেন তাতে কোন জায়গাও নেই। তিনি বলেছেন, বঙ্গাব্দের প্রবর্তক যে কে তা যখন জানা যাচ্ছে না, তখন তাকে বাংলার প্রথম প্রতাপশালী রাজা শশাঙ্কের নামে চিহ্নিত করলে ক্ষতি কি? (পূর্বাক্ত)।

অন্যদিকে অতিসম্প্রতি প্রকাশিত ‘বঙ্গাব্দের উৎস কথা, বইয়ের লেখক শ্রী সুনীল কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় নানা ভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে শশাঙ্কই আসলে বাংলা সনের প্রবর্তক এবং রাজত্বকালের ৫৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ১২ এপ্রিল সোমবার বৈশাখ বঙ্গাব্দের শুরু। এই মত সম্পর্কে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ভূতপূর্ব কারমাইকেল অধ্যাপক ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন; এই মতের স্ব-পক্ষে কিছু বলতে গেলে প্রথমেই প্রমাণ করতে হবে যে শশাঙ্ক ৫৯৪ খ্রিষ্টাব্দে এক স্বাধীন রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, অন্ততঃ ঐ সময়ে স্বাধীন ভাবে রাজত্ব করেছিলেন এর কোনো নিশ্চিত প্রমাণ নেই যদিও খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীর প্রথম ভাগে তার রাজত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য আমাদের আছে।’ অতএব, ৭ম শতাব্দীর আগে তার রাজত্বের প্রমাণ না থাকলে তিনি কীভাবে ৫৯৪ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গাব্দের প্রবর্তন করতে পারেন?

তাহলে কি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, সম্রাট আকবরই বাংলা সন বা বঙ্গাব্দের প্রচলন করেছিলেন। ঐতিহাসিক তথ্য বিচারের নিরিখে আরো সুস্পষ্ট কোন প্রমাণাদি না পেলে তা বলা যুক্তিসঙ্গত হবে না, তবে আকবরের পক্ষে বেশ জোরালো পরোক্ষ প্রমাণ আছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়; ‘ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোঘল সাম্রাজ্যের সর্ববিধ সীমানার মধ্যে বা নিকটবর্তী ভূ-খ-ে ৫৯৩-৫৯৪ বা তার কাছাকাছি সময় থেকে গণনীয় বেশ কয়েকটি অব্দের উৎস আকবরের ফসলী (সৌর হিজরী) সনের সঙ্গে সম্পর্কিত বা বাংলা সনের মতো পৃথক অব্দ হিসেবে সৃষ্টি। এদের মধ্যে আমরা উত্তর পশ্চিমের ফসলী সন (চান্দ্র-সৌর) (৫৯২-৫৯৩), পশ্চিম বাংলার বিলায়েতী অব্দ (৫৯২-৫৯৩ খ্রিষ্টাব্দ) মল্লাব্দ (৬৯৪ খ্রিষ্টাব্দ) ইত্যাদির নাম উল্লেখ করতে পারি। (বাঙলা সন; বঙ্গ, বাঙালা ও ভারত ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় পৃ; ৮৭ কলিকাতা ২০০০) অন্যদিকে গোটা বিশ্বের সাল তারিখ নিয়ে ঘাটা ঘাটি করেছেন এমন এক বিশেষ করে লেখক বলেন; ‘কেউ যুক্তি দিতে পারেন-শশাঙ্ক যেহেতু বাংলারই রাজা ছিলেন তাই তার আমলে একটা অব্দ চালু হলে সেটার-‘বঙ্গাব্দ’ নাম হওয়া অসম্ভব নয়, কিন্তু আকবরের প্রতিষ্ঠিত অব্দের নাম বঙ্গাব্দ হবে কেমন করে? এ যুক্তি ধোপে টেকে না, কেননা ‘বঙ্গাব্দ’ কথাটার ব্যবহার খুব আধুনিক। গত কুড়ি পঁচিশ বছরের আগে বঙ্গাব্দ কথাটার চল ছিল না, তখন বলা হতো শুধুই ‘সাল’ বা ‘সন’। পশ্চিম ভারতে কেউ বিক্রম = সংবতকে বিক্রম মালু বা বিক্রম সন বলে না। নেপালে যুদ্ধ সংবৎ কেউ যুদ্ধ সাল বলে না, বাংলায় তাহলে সাল বা সন হয় কেন? এইখানে মনে রাখতে হবে ‘সাল’ কথাটা ফার্সি, সন কথাটা আরবি। আগেও উল্লেখ করেছি। এ থেকে মনে হয়, হিজরী ক্যালে-ার থেকেই কোনো ভাবে উদ্ভুত আমাদের বাংলা অব্দ বা বাংলা সাল। তা যদি হয় তাহলে আকবর থিউরির চেয়ে বিশ্বাস্য অন্য কোনো থিউরির সন্ধান পাওয়া মুশকিল।’ আসলে ষষ্ঠ বা সপ্তম শতকে ‘বঙ্গাব্দ’ ‘বাংলা সন বা বাংলা সাল’ ব্যবহৃত হওয়া অসম্ভব ছিল। অত আগে বঙ্গাব্দের মতো আধুনিক শব্দের ব্যবহার যেন সম্ভব ছিল না তেমনি আরবি বা ফার্সি শব্দ ‘সন’ বা ‘সাল’-এর ব্যবহার একেবারেই অবিশ্বাস্য। এই সব কারণেই রাজা শশাঙ্কের সঙ্গে ‘বঙ্গাব্দ’ বা ‘বাংলা সনের’ সম্পর্কে ইতিহাস সম্মত প্রত্যয় বলে মনে হয় না।

ঐতিহাসিক ছাড়াও অন্য দুই ক্ষেত্রের জগত বিখ্যাত দুই মনীষীও আকবরকেই বাংলা সনের প্রবর্তক বলে মনে করেন। এদের একজন হলেন-বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা ও অন্যজন নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী বাঙালী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন।

সম্রাট আকবরের(১৫৫৬-১৬০৯) নির্দেশে এবং বিজ্ঞ রাজ জ্যোতিষী ও প-িত আমীর ফতেহ উল্লাহ সিরাজীর গবেষণার ফলে বাংলা সনের উৎপত্তি-৯৯২ হিজরী = ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দ, হিজরী সনের শুরু হযরত মোহাম্মদ (সঃ) নবী করিমের হিজরতের সময় (৬২২ খ্রিস্টাব্দ) থেকে, হিজরতের স্মৃতি রক্ষার্থে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমরের (রাঃ) খিলাফত কালে হিজরী সনের সৃষ্টি। এই সনের শুরু জুলাই ১৬,৬২২ অব্দ ধরা হলেও আসলে হিজরতের তারিখ কিন্তু রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার, সেপ্টেম্বর ২০,৬২২; আরব দেশের নিয়মানুযায়ী বছরের প্রথম মাস ১লা মহরমের তারিখ থেকে বছর ধরা হয়েছে। হিজরী সন ছিল চান্দ্রমাস। সে আগেই উল্লেখ করেছি। মনে রাখতে হবে, চান্দ্রমাসের হিসাবে হিজরী সন ও তারিখের হেরফের হত অর্থাৎ সৌর বছরের হিসাবে দিন তারিখ মাসের গরমিল হত প্রচুর ; সিরাজী মোটামুটি তাই ৯৬৩ হিজরী = ৯৬৩ বাংলা সন সমন্বয় করে গণনা শুরু করেন। এভাবে ৯৬৩ হিজরী = ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দ এর ১১ এপ্রিল, সম্রাট আকবরের সিংহাসনারোহন ও পহেলা বৈশাখ, ৯৬৩ বাংলা সন/এসব একদিকে নবী করিমের হিজরতের (৬২২ খ্রিস্টাব্দ), বাংলা সনের শুরু ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে এবং সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহন, (১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ) এর স্মৃতিবহ এবং ইংরেজী সন থেকে ৫৯৩ বছর ৩ মাস ১১ দিন কম অর্থাৎ মোটামুটি বাংলা সনের সঙ্গে ৫৯৩ যোগ দিলেই ইংরেজী সন মিলতে পারে। আকবর অবশ্য তাঁর রাজ্যকালের ২৯তম বর্ষে ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে এই সন চালু করেন। কাজেই বুঝতে হবে বাংলা সনের জন্ম হিজরীর জন্ম বছরে ৬২২, তাঁর নবযাত্রা ৯৬৩ হিজরী = ৯৬৩ বাংলা সন = ১১ এপ্রিল, ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দ। মনে রাখতে হবে, প্রবর্তিত বাংলা ও প্রচলিত হিজরী সনের নব পর্যায়ের শুরু এক হলেও চান্দ্র মাসের হেরফেরে হিজরী সন কিন্তু বেড়ে যাচ্ছে; এই যেমন ২০০৬, এপ্রিল ১৪ = বাংলা সন ১৪১৩ হিজরী ১৪২৭ অর্থাৎ ১৪ বছর অগ্রগামী, এর কারণ চান্দ্র ও সৌর মাসের হিসাবের হেরফের; চান্দ্রমাস যেমন ১০দিন এগিয়ে গেছে সৌরমাস তেমনি ১০ দিন পিছিয়ে আছে।

জনাব মোঃ আবু তালিব ‘বাংলা সনের জন্ম কথা’ বইটিতে লিখেছেন, আমির ফতে উল্লাহ সিরাজীর ফর্মুলা অনুযায়ী এলাহী সনের বছর শুরুর দিন ছিলো ১১ মার্চ কিন্তু তখন বাংলা সনের শুরুর দিন ছিলো ১১ এপ্রিল ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দ (পৃষ্ঠা-৫৬)। যদিও আকবরের সিংহাসনে আরোহনের প্রকৃত দিন ছিলো ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৫৫৬ (পৃষ্ঠা-১৪)।

আমার প্রশ্ন, এই সকল পার্থক্য কেন করা হলো? এর সহজ উত্তর এটাই হতে পারে যে, আমির ফতেউল্লাহ সিরাজী এলাহী সন প্রবর্তনের সময় আকবরের সিংহাসনে আরোহনের বছরটি ঠিক রাখেন কিন্তু বছর শুরু করেন ঐ সময়ে হিজরী সনের বছর শুরুর দিন দিয়ে (বাংলা সনের জন্ম কথা পৃষ্ঠা-৩২)। আমরা একইভাবে দেখতে পাই, খালিফা ওমর ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে হিজরী পঞ্জিকা গণনার আদেশ দেন, হিজরতের প্রকৃত বছর ৬২২ খ্রিস্টাব্দ থেকে। এমন কি হিজরতের প্রকৃত দিন অনুযায়ী বছর গণনার শুরু না করে চলতি আরবী মাসের প্রথম দিন ১ মর্হরম থেকে ঐ হিজরী সনের প্রারম্ভ ধরা হয়েছিলো।

এভাবেই এটা স্পষ্ট হয় যে, বাংলায় আদি থেকে এর ঋতু বৈচিত্র অনুযায়ী যে বাংলা সন চালু ছিল আমির ফতেউল্লাহ সিরাজী বাংলার মাটিতে সেই সনটিকেই গ্রহণ করে হিজরী সনের পরিবর্তে রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা নেন। সিরাজীর এই ব্যবস্থার ফলে বাংলা সনের শুরুর দিন বা সৌর বছর গণনার কোন পরিবর্তন হয়নি। জনাব মোঃ আবু তালিব ‘বাংলা সনের জন্ম কথা’ বইটিতে লিখেছেন, কিন্তু প-িতদের মতে আমির ফতেউল্লাহ সিরাজী বাংলা সন প্রবর্তনের সময় মহারাষ্ট্রের শকাব্দ পঞ্জিকা থেকে মাসগুলোর নাম গ্রহণ করেন (পৃষ্ঠা- ২১)। এই ধারণাও অসত্য কারণ বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের নাম শকাব্দ পঞ্জিকায় কুনওয়ার। তাছাড়া সিরাজীর সময়ে বাংলা সমতলে ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় যেসব পঞ্জিকার প্রচলন ছিল তাদের অধিকাংশ পঞ্জিকারই বছর শুরুর দিন ছিল ১৪-১৫ এপ্রিল। অতএব প্রতীয়মান হয় যে, রাজার রাজ্যাভিষেকের বছর ধরে যে সব পঞ্জিকার বছর গণনা শুরু করা হয়, সে সকল বছরে যে দিনেই রাজার অভিষেক হোক না কেন, ঐতিহ্যের খাতিরে বছর শুরুর দিন অপরিবর্তিত রাখা হয়। এর ফলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, আকবরের সভাসদ ফতেউল্লাহ সিরাজী প্রকৃত পক্ষে ‘এলাহী সন’- এর প্রবর্তক। তবে তিনি এই সন প্রবর্তনের সময় হিজরী সনের শুরুর দিনটি গ্রহণ করেন। ফতেউল্লাহ সিরাজী বাংলা অঞ্চলের প্রচলিত বাংলা পঞ্জিকা থেকে কেবল রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে হিজরী সনের পরিবর্তে প্রচলিত বাংলা পঞ্জিকা গ্রহণ করেন।

মোগল আমলে রাজস্ব আদায়ের গুরুত্ব কিংবা অন্য কোন প্রশাসনিক প্রয়োজন যাই হোক না কেন, আমাদের আজকের জাতীয় জীবনে বাংলা পঞ্জিকার গুরুত্ব অপরিসীম। এই পঞ্জিকা হিজরী থেকে ভিন্ন জাতের, শকাব্দ থেকে ভিন্ন ঐতিহ্যের এবং খ্রিস্টাব্দ থেকে ভিন্ন ঋতুর বৈচিত্র্যের। তাছাড়া বর্তমান বাংলা পঞ্জিকার গোড়ার বছর এমন এক সময় (৫৯৩ খ্রিস্টাব্দ) নির্দেশ করে যখন বাংলার সমতলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে গেছে।

ঐতিহাসিকদের মতে, শশাঙ্ক ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান মুর্শিদাবাদের ১০ কি. মি. দূরে কর্ণ সুবর্ণ (বর্তমান কানসোনা) নামক স্থানে তার রাজধানী স্থাপন করেন। এই ইতিহাস যদি সত্যি হয়, বর্তমানকালের বাংলা সৌর পঞ্জিকার শুরুর বছর তা হলে শশাঙ্কের রাজধানী স্থাপনের বছরই নির্দেশ করে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের বাংলা ও ভারতীয় পঞ্জিকা কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘দেশ’ পত্রিকায় ১৬ নভেম্বর ১৯৯৬ সংখ্যায় প্রকাশিত এক পত্রে শ্রী সুধীর কুমার চট্টোপাধ্যায় জানান, ভারতের সৌর এবং চন্দ্র-সৌর পঞ্জিকাগুলো অন্ততঃ ১৬০০ বছরের বেশি পুরানো। এই পঞ্জিকাগুলো নাক্ষত্রিক এবং এদের বছর শুরুর দিনটি ১ বৈশাখ বা সাধারণতঃ ১৪ এপ্রিলই পড়ে। তবে এসব পঞ্জিকার মাসগুলো বিভিন্ন দৈর্ঘ্যরে হতো। এমনকি একই পঞ্জিকার মাস ভিন্ন ভিন্ন স্থানে দৈর্ঘ্যের মতো।

বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা ১৯৫২ সালের নভেম্বর মাসে একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটি যে সুপারিশ প্রদান করে তা ছিল নি¤œরূপ ঃ

১. নাক্ষত্রীয় পঞ্জিকার পরিবর্তে ক্রান্তীয় পঞ্জিকা চালু করা।

২. বছরের শুরু বৈশাখের পরিবর্তে চৈত্র থেকে শুরু করা।

৩. চৈত্র মাস ৬/৭ দিন দেরি করে শুরু করা।

৪. শকাব্দকে জাতীয় পঞ্জিকা ঘোষণা করা।

পূর্ব পাকিস্তানে ড. শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা পঞ্জিকা সংশোধনের জন্য অনুরূপ একটি কমিটি গঠন করা হয়। শহীদুল্লাহ কমিটির সুপারিশ ছিলো নি¤œরূপঃ

১. মোগলদের সময় থেকে চালু বাংলা পঞ্জিকাকে জাতীয় পঞ্জিকা করা।

২. বছরের হিসাব হিজরী বছরের গণনা হিসাবে গ্রহণ করা।

৩. বৈশাখ থেকে ভাদ্র মাস ৩১ দিনের এবং অন্যান্য ৩০ দিনের করা।

৪. অধিবর্ষের (খবধঢ় ুবধৎ) জন্য চৈত্র মাসে একটি অতিরিক্ত দিন হিসাব করা।

মোঘনাদ সাহা কমিটির সুপারিশ ভারতীয় সরকার গ্রহণ করলেও ঐতিহ্য বিরোধী হওয়ায় জনপ্রিয় হয়নি। শ্রী চট্টপাধ্যায়ের মতে ভারতীয় জ্যোতিষী এবং পানচাঙ প-িতদের মধ্যে একটি দৃঢ় মত এই যে, যে দিন সূর্য তার যাত্রা পথে নাক্ষত্রিক মেঘরাশির প্রথম বিন্দুতে পৌঁছায়, অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল জাতীয় পঞ্জিকাটির প্রথম দিন করা হোক।

বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৬ সালে বাংলা পঞ্জিকার ক্ষেত্রে ড. শহীদুল্লাহ কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করে, তবে ১৪ এপ্রিল বছর শুরুর দিন ধার্য করা হয় এবং খ্রিস্টীয় পঞ্জিকায় অধিবর্ষের বছরে চৈত্র মাসে একদিন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়।

এখন আমরা বাংলা পঞ্জিকার ইতিহাস আলোচনায় নি¤œবর্ণিত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি ঃ

১. ঋতু বৈচিত্র্যের ভিত্তিতে সৃষ্ট বাংলা পঞ্জিকা আমাদের জাতীয় জীবনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

২. বাংলা পঞ্জিকা মোগল শাসনের বহু পূর্ব থেকে আসা আমাদের একটি হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্য।

৩. মোগলরা বাংলায় খাজনা আদায়ের জন্য ১৫৮৬ খ্রিস্টাব্দের হিজরী পঞ্জিকার পরিবর্তে বাংলা পঞ্জিকা গ্রহণ করে।

৪. আজকের বাংলা পঞ্জিকা প্রকারান্তরে শশাঙ্কাব্দ, যার শুরু ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দ।

বাংলা সন বাংলাদেশের মানুষের নিজস্ব সন। এর উৎপত্তি ও বিকাশের ইতিহাস ইসলামী উত্তরাধিকার সঞ্জাত। এই সনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের ঐতিহ্যগত অনুভব। তাই বাংলা সন আমাদের ঐতিহ্য পরম্পরায় এক অনন্য সাংস্কৃতিক উপাদানে পরিণত হয়েছে। বাংলা নববর্ষ এলে, পয়লা বৈশাখ এলে আমরা আনন্দ উল্লাসে বিমোহিত হই। কিন্তু তা সারা বছর ধরে রাখবার মধ্যে আমাদের স্বকীয়তার তাৎপর্য নিহীত রয়েছে।

The post বাংলা নববর্ষের ইতিহাস appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উলিপুরে বর্ষবরণ https://www.ulipur.com/?p=3607 Fri, 14 Apr 2017 17:22:27 +0000 http://www.ulipur.com/?p=3607 মোঃ শাহাদত হোসেন শুভ, উলিপুরঃ আজ যেন বাঙালীর প্রানের মিলন মেলা, আজ বাংলা বছরের প্রথম দিন। এই দিনটিকে ঘিরে বাংলাদেশ নানা রঙ্গে সাজে, সবাই মিলে মেতে উঠে প্রানের উৎসবে। তেমনি উলিপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ উলিপুর এম এস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বর্নীল সাজে সেজেছে উলিপুরের মানুষজন। পহেলা বৈশাখে সব কিছু ভালোভাবে সূচনা করার অভিপ্রায় [...]

The post আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উলিপুরে বর্ষবরণ appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
মোঃ শাহাদত হোসেন শুভ, উলিপুরঃ
আজ যেন বাঙালীর প্রানের মিলন মেলা, আজ বাংলা বছরের প্রথম দিন। এই দিনটিকে ঘিরে বাংলাদেশ নানা রঙ্গে সাজে, সবাই মিলে মেতে উঠে প্রানের উৎসবে। তেমনি উলিপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ উলিপুর এম এস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বর্নীল সাজে সেজেছে উলিপুরের মানুষজন।

পহেলা বৈশাখে সব কিছু ভালোভাবে সূচনা করার অভিপ্রায় নিয়ে গ্রাম-শহর সব জায়গায় ধনী-গরিব সবার মাঝে একটা উৎসবের আমেজ থাকে। ঈদের পরই নিম্নবিত্তদের জামা নেবার আরেকটা উৎসব এই বাংলা নববর্ষ। বড় শহরের ফুটপাথ থেকে শুরু করে বড় বড় শপিংমলগুলোতে বৈশাখে ব্যাপক কেনাবেচা হয়। আর উচ্চবিত্তদের ঘিরে বড় বড় ফ্যাশন হাউসগুলোর ব্যবসাও জমে উঠে নববর্ষকে ঘিরে। ছোট পরিসরে হলেও এসব কিছুরই প্রতিফলন ঘটে আমাদের উলিপুরে।

সকালে উলিপুর এম এস স্কুল মাঠ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্বাবধানে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালী বের হয়, যা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার এম এস স্কুলে এসে শেষ হয়। দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের অংশগ্রহনে মনোমুগ্ধকর এক সাংস্কতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

The post আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উলিপুরে বর্ষবরণ appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
পহেলা বৈশাখ আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য https://www.ulipur.com/?p=3588 Fri, 14 Apr 2017 02:40:02 +0000 http://www.ulipur.com/?p=3588 তালাত মাহমুদ রুহান: সংস্কৃতির মাধ্যমেই প্রতিটি জাতিগোষ্ঠী বিশ্ব দরবারে পরিচিত হয়ে ওঠে। ‘নববর্ষ’ শব্দটির সঙ্গে বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষের পরিচয় অনেক পুরনো। এ দেশে বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন খুব ঘটা করেই পালন করা হয়। বৈশাখ এর প্রথম দিন  সারা বাংলাদেশে আনাছে -কানাছে আনন্দের ঢেউ উঠবে। শুভ নববর্ষ কে বরণ করবে নানা আয়োজনের মধ্যো দিয়ে। বৈশাখী [...]

The post পহেলা বৈশাখ আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
তালাত মাহমুদ রুহান:
সংস্কৃতির মাধ্যমেই প্রতিটি জাতিগোষ্ঠী বিশ্ব দরবারে পরিচিত হয়ে ওঠে। ‘নববর্ষ’ শব্দটির সঙ্গে বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষের পরিচয় অনেক পুরনো। এ দেশে বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন খুব ঘটা করেই পালন করা হয়।

বৈশাখ এর প্রথম দিন  সারা বাংলাদেশে আনাছে -কানাছে আনন্দের ঢেউ উঠবে। শুভ নববর্ষ কে বরণ করবে নানা আয়োজনের মধ্যো দিয়ে। বৈশাখী উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্টীর সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে এই দিনটিতে । কিছু কিছু গ্রামের মিলিত হয়ে খোলা মাঠে আয়োজন করে বৈশাখী মেলার। এসব মেলায় পাওয়া যায় স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, সব ধরণের হস্তশিল্প  এ ছাড়া শিশু-কিশোরদের খেলনা, মেয়েদের সাজসজ্জার সামগ্রীসহ আরো কতো কিছু।

এছাড়াও রকমারি খাদ্যসামগ্রী, যেমন, চিড়া, মুড়ি, খৈ, বাতাসা ও বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির বৈচিত্র্যময় সমারোহ থাকে মেলায়। এছারাও থাকে নানা রকম কুঠির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত শুটকি ভর্তা খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। যেমন নৌকা বাইচ, লাঠি খেলা হাড়িভাঙা কিংবা কলা গাছ বেয়ে উঠা ।

এদিন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। ইতিহাস খুঁজতে গেলে, সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হত। এর পর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হত। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রুপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকানদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন আপ্যায়ন করে থাকে। প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্ত্তণ ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়। আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে।

এরপর ১৯৩৮ সালেও অনুরূপ কর্মকান্ডের উল্লেখ পাওযা যায়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় হয় নি।নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখে প্রতিটি মানুষের হালখাতা ও সুন্দর আগামীর কল্যাণের সব পরিকল্পনা ও ভাবনাই অনেক গরুত্বপূর্ণ। যা মানুষের পেছনের দুঃখ-বেদনা ভুলে আগামীর দিনগুলোকে কল্যাণ ও সুখ-শান্তিতে রাঙিয়ে নিতে পারে; নৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সে ভাবনাই সবার একান্ত কাম্য।

অনৈতিক ও বিজাতীয় কর্মকাণ্ডমুক্ত ব্যবসায়িক ও কল্যাণের কাজে বৈশাখ ও হালখাতা উদযাপনে এগিয়ে আসা ইসলাম ও সময়ের দাবি

The post পহেলা বৈশাখ আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>