মুক্তিযুদ্ধে উলিপুর Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=মুক্তিযুদ্ধে-উলিপুর কুড়িগ্রাম জেলার তথ্য ও সংবাদ Sat, 27 Feb 2016 19:26:56 +0000 en-US hourly 1 https://www.ulipur.com/wp-content/uploads/2022/10/1665889308.png মুক্তিযুদ্ধে উলিপুর Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=মুক্তিযুদ্ধে-উলিপুর 32 32 নূর মোহাম্মদ সরকারঃ একটি পতাকার জন্য জীবন বাজি রাখা বীর সেনানী https://www.ulipur.com/?p=2486 Sat, 27 Feb 2016 18:40:10 +0000 http://www.ulipur.com/?p=2486 প্রকৌ. রূপম রাজ্জাক: নূর মোহাম্মদ সরকার। বাঙলা মায়ের বীর সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। একটি পতাকার জন্য, একটি স্বাধীন ভুখন্ডের জন্য, শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে, এনেছেন রক্তিম ভোর। নূর মোহাম্মদ সরকার ১৯৫৫ সালের ৯ই আগস্ট কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর [...]

The post নূর মোহাম্মদ সরকারঃ একটি পতাকার জন্য জীবন বাজি রাখা বীর সেনানী appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
প্রকৌ. রূপম রাজ্জাক:
নূর মোহাম্মদ সরকার। বাঙলা মায়ের বীর সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। একটি পতাকার জন্য, একটি স্বাধীন ভুখন্ডের জন্য, শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে, এনেছেন রক্তিম ভোর।

নূর মোহাম্মদ সরকার ১৯৫৫ সালের ৯ই আগস্ট কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই রঘুরায় গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। নছিয়ত উল্লাহ ও ছমিরন নেছা দম্পতির আট ছেলেমেয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। পড়াশোনার হাতেখড়ি গোড়াই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে পঞ্চম শ্রেণী এবং দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩ সালে এসএসসি পাশ করেন। পরে কুড়িগ্রাম ভোকেশনাল থেকে ট্রেড কোর্স করে কারিগরি শিক্ষা অর্জন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ সরকার ৪ মেয়ে ও এক ছেলের জনক।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা রেডিওতে শোনেন নূর মোহাম্মদ। তখন তিনি দূর্গাপুর হাইস্কুলের ছাত্র। ঘোষণার পরে তিনি এবং তার সহপাঠীরা মিলে দূর্গাপুর হাইস্কুলে তালা লাগিয়ে মিছিল বের করেন। মিছিল নিয়ে তাঁরা বালাকান্দি হাইস্কুল যান, সেখানে স্কুল বন্ধ করে মিছিল নিয়ে ফরকেরহাট হাইস্কুলে যান এবং সেখানে গিয়ে সমাবেশ করেন। ওই সমাবেশ থেকে তিনি এবং তার সহপাঠীরা যুদ্ধে যেতে উদ্বুদ্ধ হন। সমাবেশ শেষে বাড়ি ফিরে যুদ্ধে যাবার পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনার কথা জানান এলাকার মো. ইয়াকুব আলী সরদার ও মো. আব্দুর জব্বার আলীকে। তাদের মধ্যে মো. ইয়াকুব আলী প্রথমেই রাজি হয়ে যায়। আর আব্দুল জব্বার প্রথমে যেতে না চাইলেও পরে রাজি হন। তারপর ২৬শে মার্চ চূড়ান্ত ঘোষণা আসার পর এই তিনজন বাড়িতে কাউকে কিছু না বলে সে মাসেই বলে যুদ্ধে চলে যান। এ সময় পথিমধ্যে পাশের গ্রামের আরো কয়েকজনকে পাওয়া যায় যারা যুদ্ধে যাচ্ছিলেন। সেদিনের কথা মনে হলে, স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও নূর মোহাম্মদের চোখ ছলছল করে। পাশের গ্রামের যে বন্ধুরা যুদ্ধে যাচ্ছিল তাদের মধ্যে এক ছেলেকে তার বাবা বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য পিছুপিছু ছুটে আসেন। তারপর ছেলেটি যখন নৌকায় ওঠে নদী পার হওয়ার জন্য তখন তার বাবা নদীতে লাফিয়ে পড়ে। হতভম্ব হয়ে তীরে নৌকা ভিড়িয়ে ছেলেটিকে নামিয়ে দিতে হয়।

নূর মোহাম্মদ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে প্রশিক্ষণ নেন ১১ নং সেক্টরের অধীনে। প্রথম দিকে ভারতের আশপাশে, পরে কুড়িগ্রাম জেলার অন্তর্গত রৌমারিতে নতুন করে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হওয়ায় সেখানে প্রশিক্ষণ নেন। তারপর মাহবুবুর রহমান (চন্ডুল),নজরুল ও সোলায়মানের নের্তৃত্বে দেড় মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এদিকে প্রশিক্ষণ চলাকালে তার মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার কথা শুনে এলাকার রাজাকার মাওলানা মো. আব্দুল হামিদ ওরফে দাগগিল ও পাকিস্তান সমর্থিত লোকজন তার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। ওই স্মৃতি মনে করে নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার কারণে রাজাকার ও পাকিস্তানের সহযোগীরা আমাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়। আমার বাবাকে হুমকি দেয় আমাকে যেন মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরিয়ে আনে। এরপর তারা আমার পরিবারের উপর নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এমনকি আমাদের ক্ষেতের পাকা ধান কাটতে দেয়নি তারা।’

প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে চিলমারী উপজেলাধীন রানীগঞ্জ এলাকার একটি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে অবস্থান করেন। এই সময় ভারতীয় বাহিনীসহ তাদের ইউনিট চিলমারী আক্রমণ করেন। সেখানে অনেক আলবদর, রাজাকার ধরা পড়ে। তাদের মধ্যে মঞ্জু মিয়া ও ওলী আহম্মেদ পাকিস্তানী দোসরদের অন্যতম নেতা ছিল। রাজাকারদের হত্যার পর পাকিস্তানী ক্যাম্পটি দখল করা হয়। এ সময় ক্যাম্প থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র-সস্ত্র পাওয়া যায়।

এছাড়া বেশ কয়েকটি সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন নূর মোহাম্মদ। সেসব যুদ্ধের স্মৃতি এখনো তার চোখে জ্বল জ্বল করে, শিহরণ জাগায় বুকে। কয়েকযুগ পরেও সেইসব দিনের কথা মনে হলে বুকের ভেতর থেকে ওঠে আসে অন্যরকম শক্তি ও মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রেরণা।

The post নূর মোহাম্মদ সরকারঃ একটি পতাকার জন্য জীবন বাজি রাখা বীর সেনানী appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
মুক্তিযুদ্ধে উলিপুর: শোকাবহ হাতিয়া গনহত্যা https://www.ulipur.com/?p=2224 https://www.ulipur.com/?p=2224#respond Fri, 12 Jun 2015 21:31:15 +0000 http://www.ulipur.com/?p=2224 ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর পাক-হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আল-সাম্‌স বাহিনীর সহযোগীতায় নিরীহ ৬ শত ৯৭ জন গ্রামবাসিকে গুলি করে হত্যা করে। উপজেলা সদর থেকে ৮ কিঃ মিঃ পূর্ব দিকে ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্ঠিত উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের দাগারকুটি গ্রামের ঘুমন্ত এসব নিরীহ মানুষকে ধরে এনে পাকিস্তানী হায়েনারা নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে হত্যা করে। স্বাধীনতা [...]

The post মুক্তিযুদ্ধে উলিপুর: শোকাবহ হাতিয়া গনহত্যা appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর পাক-হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আল-সাম্‌স বাহিনীর সহযোগীতায় নিরীহ ৬ শত ৯৭ জন গ্রামবাসিকে গুলি করে হত্যা করে। উপজেলা সদর থেকে ৮ কিঃ মিঃ পূর্ব দিকে ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্ঠিত উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের দাগারকুটি গ্রামের ঘুমন্ত এসব নিরীহ মানুষকে ধরে এনে পাকিস্তানী হায়েনারা নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে হত্যা করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে জঘন্নতম নারকীয় এ হত্যাকান্ডের ইতিহাস জাতীয় পর্যায়ে তেমন গুরুত্ব না পেলেও উলিপুরে মানুুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে। আজও নিহত শহীদদের স্বজনরা খুঁজে ফিরে তাদের আপনজনকে। দাগারকুটি গ্রামটিকে ঘিরে স্মৃতিসৌধ নির্মান করে এলাকার মানুষজন প্রতি বছর শহীদদের স্মরণ করে আসছিল। কিন্তু করালগ্রাসী ব্রহ্মপূত্র নদ দাগারকুটি গ্রামটিই তার বুকে ধারন করে নিয়েছে। বর্তমানে অনন্তপুর বাজারের পশ্চিম দিকে নতুন করে স্মৃতিসৌধ নির্মান করে দিবসটি পালন করে আসছেন শহীদ পরিবার গুলো সহ উলিপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও দি বেস্ট,হাতিয়া। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা যুদ্ধের এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ হয়তো মানুষের হৃদয় থেকে মুছে যাবে, কিন্তু শহীদের স্বজনরা তাদের আপনজনদের স্মরন করবেন সারাজীবন নিরবে-নিভৃতে। গনহত্যার শিকার শহীদ পরিবার গুলোর দাবী হাতিয়া দিবস জাতীয় পর্যায়ে যথাযোগ্য মর্যদায় পালন সহ ক্ষতিগ্রস্থ শহীদ পরিবার গুলোকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পূনর্বাসন করা হউক।

১৯৭১ সালের সেই নারকীয় রক্তঝরা দিনটি ছিল ২৩ রমজান,শনিবার। গ্রামের বেশীর ভাগ মানুষ সেহরীর খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, কেউ ঘুমানোর প্রস্তুতি নিশ্চিছিল। এরই মধ্যে ফজরের নামাজের আযান ধ্বনিত হচ্ছে মসজিদে মসজিদে। নামাজের প্রস্তুতি নিতে অজুও সেরে ফেলেছেন অনেকে। হঠাৎ পাকিস্তানী হায়েনার মর্টার সেল আর বন্দুকের অবিরাম গুলি বর্ষনে প্রকম্পিত হয়ে দাগারকুটি গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলো। গ্রামগুলোর মানুষজন কিছু বুঝে উঠার আগেই পাকিস্তানী হায়েনা ও  তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আল-সাম্‌স বাহিনী মিলে নিরীহ গ্রামের বাড়ী-ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর সাথে চলতে থাকে লুটপাঠ ও নির্যাতন। আকর্ষ্মিক এ পরিস্থিতিতে এলাকার নিরীহ মানুষজন উদ্ভ্রান্তের মতো এলোপাথাড়ী ছোটাছুটি শুরু করেন। পাকিস্তানী বাহিনীর ছোঁড়া বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষনে মানুষজন জীবন বাঁচতে পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতসহ ঝোঁপ-জঙ্গলে শুয়ে জীবন বাচানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে। অনেকে ব্রহ্মপূত্র নদে ঝাঁপ দিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু অসহায় বৃদ্ধ আর শিশুদের আর্তচিৎকারে এলাকার আকাশ-বাতাশ ক্রমেই ভারী হয়ে উঠে। এসব অসহায় গ্রামবাসীর জীবন বাঁচানোর চেষ্টা মহুর্তেই শেষ হয়ে যায়। পাক-হানাদার বাহিনী,তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আল-সাম্‌স বাহিনীর সহযোগীতায় আত্মগোপন করা মানুষগুলোকে ধরে নিয়ে এসে দাগারকুটিতে জড়ো করে হাত-পা বেঁধে নির্দয় ভাবে গুলি করে হত্যা করে। তাদের এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ থেকে সেদিন বৃদ্ধ ও মায়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা শিশুটিও রক্ষা পায়নি। দিনব্যাপী চলে পাক-হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও অগ্নিসংযোগ। আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়, হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর, দাগারকুটি, হাতিয়া বকসি, রামখানা ও নয়াদাড়া গ্রামের শত শত ঘর-বাড়ী। মহুর্তেই গ্রামগুলো পরিনত হয় ধ্বংস স্তুপে।  সেগুলো আজ শুধুই স্মৃতি।

তথ্য সূত্র: http://www.bangla.kurigramlive.com/4586

The post মুক্তিযুদ্ধে উলিপুর: শোকাবহ হাতিয়া গনহত্যা appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
https://www.ulipur.com/?feed=rss2&p=2224 0