Good Teacher Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=good-teacher কুড়িগ্রাম জেলার তথ্য ও সংবাদ Sun, 04 Mar 2018 20:28:55 +0000 en-US hourly 1 https://www.ulipur.com/wp-content/uploads/2022/10/1665889308.png Good Teacher Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=good-teacher 32 32 উলিপুরের উপকারী ব্যক্তিত্ব আবুল কাশেম বিএসসি https://www.ulipur.com/?p=5101 Sat, 30 Dec 2017 17:29:43 +0000 http://www.ulipur.com/?p=5101 নিউজ ডেস্কঃ কাউকে হাসপাতালে নিতে হবে বা কারো লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার জোগাড়! আবুল কাশেম বিএসসি আছেন। মাথা গোঁজার ঠাঁই যাদের নেই, তাদের পাশেও দাঁড়ান। তিনি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পাণ্ডুল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক। আব্দুল খালেক ফারুক সম্মান জানিয়ে এসেছেন। ১৯৭০ সালে দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন মো. আবুল কাশেম বিএসসি। প্রথম বেতনের [...]

The post উলিপুরের উপকারী ব্যক্তিত্ব আবুল কাশেম বিএসসি appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
নিউজ ডেস্কঃ
কাউকে হাসপাতালে নিতে হবে বা কারো লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার জোগাড়! আবুল কাশেম বিএসসি আছেন। মাথা গোঁজার ঠাঁই যাদের নেই, তাদের পাশেও দাঁড়ান। তিনি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পাণ্ডুল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক। আব্দুল খালেক ফারুক সম্মান জানিয়ে এসেছেন।

১৯৭০ সালে দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন মো. আবুল কাশেম বিএসসি। প্রথম বেতনের টাকায় এক শিক্ষার্থীকে একটি জামা কিনে দেন। পরে ওই শিক্ষার্থী ওই স্কুলেরই শিক্ষক হয়েছিলেন। সেটাই শুরু।

১৯৭৭ সালের কথা
নবম শ্রেণির ফার্স্টবয় ছিল আব্দুল আজিজ। তার বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। খেয়ে না খেয়ে স্কুলে আসত ছেলেটি। থাকার মতো ঘরও ছিল না। আজিজের কষ্ট বুকে লাগে আবুল কাশেমের। তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তখন তাঁর নিজেরই একটিমাত্র ঘর।

তাতে পার্টিশন দিয়ে আজিজের জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করলেন। আজিজকে পড়ানোর দায়িত্বও নিলেন। পরে আব্দুল আজিজ ঘোড়াশাল সার কারখানার নির্বাহী প্রকৌশলী হয়ে চাকরি জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন।

শফিকুল গৃহকর্মী ছিল
বাবা ছিল ভ্যানচালক। কিন্তু শফিকুলের পড়ার আগ্রহ ছিল। কাশেম স্যার তাকে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন। সঙ্গে করে স্কুলে নিয়ে যেতেন। পড়া দেখিয়ে দিতেন। ছেলেটি এসএসসিতে স্টার মার্কস পায়। এখন বিমানবাহিনীতে কর্মরত। আরো নাম করা যায় শামসুল হক, রফিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজার রহমানেরও। আবুল কাশেম তাদেরও নিজের বাড়িতে রেখে পড়িয়েছেন। সবাই এখন প্রতিষ্ঠিত। আবুল কাশেম দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিনা পয়সায় পড়াতেন। বই-খাতাও কিনে দিয়েছেন। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাস নিতেন।

মাঈদুল পড়ে মেডিক্যাল কলেজে
স্কুলে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসে প্রথম ছিল মাঈদুল। এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পায়। কিন্তু বাদাম বিক্রেতা বাবার পক্ষে আর খরচ জোগানো সম্ভব ছিল না। তার স্বপ্ন পূরণের সঙ্গী হন আবুল কাশেম। তাকে নিয়ে সাংবাদিকদের দ্বারে দ্বারে যান। খবর ছাপা হয় মাঈদুলকে নিয়ে। সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন অনেকেই। মাঈদুল এখন পড়ে রাজশাহী মেডিক্যালে।   আবুল কাশেমের কাছে তালিকা আছে—কোনো কোনো কলেজে দরিদ্র মেধাবী ছাত্রদের বিনা বেতনে পড়ানো হয়। অনেক বিত্তবান সাবেক ছাত্রের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ অব্যাহত আছে। যেমন মমিনুলকে আবুল কাশেম চাঁদা তুলেই ভর্তি করিয়েছেন ঢাকার মিশন ইন্টারন্যাশনাল কলেজে।

রোগীদের ভরসা যখন
১৯৮৯ সালের কথা। প্রতিবেশী আব্দুল খালেক পেপটিক আলসারে আক্রান্ত হন। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করিয়ে কোনো লাভ হচ্ছিল না, বরং দিনে দিনে তাঁর অবনতি হচ্ছিল। আবুল কাশেম তাঁকে নিয়ে রংপুরে এক চিকিৎসকের কাছে যান। খালেক আরোগ্য লাভ করেন। ১৯৯৯ সালের কথা। সপ্তম শ্রেণির ফার্স্টবয় তোফায়েল কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়। তাকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যালে যান আবুল কাশেম। সাবেক ছাত্র সাংবাদিক রেজানুর রহমান ও স্থানীয় এক নেতার সহায়তা নেন। এভাবে নুরুজ্জামান, আকবরসহ অনেকের চিকিৎসার জন্য ঢাকা বা রংপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ছোটাছুটি করেছেন। তাঁদের কেউ বেঁচে আছেন, কেউ নেই। আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার নিজেরই এখন অনেক বয়স। তবু অসুস্থ ও অসহায় রোগীদের নিয়ে যেতে হয় ডাক্তারের কাছে। ’

বাঁচানো যায়নি মমিনকে
দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মমিন। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি ও এসএসসিতে প্রথম বিভাগ পায়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকানোর আগেই কিডনি বিকল হয় মমিনের। ভারতে দুই দফা চিকিৎসাও হয়। তৃতীয় দফায় আবুল কাশেম জাপান প্রবাসী এক সাবেক ছাত্রের কাছ থেকে চার লাখ টাকা জোগাড় করেন। কিন্তু সেবার হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মমিন মারা যায়। দিন-রাত ছোটাছুটি করে প্রিয় ছাত্র মমিনকে বাঁচাতে না পারার কষ্টটা পোড়ায় তাঁকে। মমিনের কথা বলতে গিয়ে দুই চোখে নামে অশ্রুধারা।

যাদের ঘর নেই
আবুল কাশেমের পুকুরপারে পরিত্যক্ত কিছু জমি আছে। আব্দুল আজিজ, ইউসুফ আলী, কফিল উদ্দিনসহ আরো কয়েকজনকে সেখানে ঘর তুলে থাকতে দিয়েছিলেন আবুল কাশেম। পরে কেউ কেউ নিজের ভিটা কিনে চলে গেছেন। এখন যেমন ভিক্ষুক শমসের আলী থাকেন একটি ঘরে। গ্রামবাসী বিরোধ মেটাতেও আবুল কাশেমের কাছে আসে। দরিদ্র বিবাহযোগ্য কন্যাদের বিয়ের খরচ জোগাতে আবুল কাশেমকে হাট-বাজারে ঘুরতে দেখা যায়। এ নিয়ে তিনি লজ্জা বা সংকোচ বোধ করেন না। বলেন, ‘মানুষের কষ্ট দেখতে পারি না। বিপদ-আপদে পাশে থাকতে চাই। ’

একজন আবুল কাশেম
পাণ্ডুল ইউনিয়নের কাগজিপাড়া গ্রামে আবুল কাশেম বিএসসির জন্ম ১৯৪৮ সালের ১ মে। তাঁর জন্মের ছয় মাস পর বাবা মারা যান। মা ও নানির আশ্রয়ে বড় হন। এসএসসি পাস করেন দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি ও বিএসসি পাস করেন। তখন তিনি রংপুর বাস টার্মিনালের পাশে লজিং থেকে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। তাঁর সরকারি চাকরি পাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু শিক্ষকতা ভালোবাসতেন। তাই ১৯৭০ সালে দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বিএসসি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। গণিত, পদার্থ ও রসায়নশাস্ত্রে তিনি পারদর্শী। ২০০৯ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন। তাঁর স্ত্রীও একটি বেসরকারি মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। তাঁর চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে দুই ছেলে ব্যাংকার। এক মেয়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তা। অন্য মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

সুত্রঃ allbanglanews

The post উলিপুরের উপকারী ব্যক্তিত্ব আবুল কাশেম বিএসসি appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>