War of Liberation Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=war-of-liberation কুড়িগ্রাম জেলার তথ্য ও সংবাদ Sun, 12 Nov 2017 18:05:47 +0000 en-US hourly 1 https://www.ulipur.com/wp-content/uploads/2022/10/1665889308.png War of Liberation Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?tag=war-of-liberation 32 32 আজ হাতিয়া গণহত্যা দিবস https://www.ulipur.com/?p=4750 Sun, 12 Nov 2017 18:04:55 +0000 http://www.ulipur.com/?p=4750 আব্দুল মালেকঃ আজ ১৩ নভেম্বর ‘হাতিয়া গণহত্যা দিবস’। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক-হানাদার বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় নিরীহ ৬ ’শ ৯৭ জন গ্রামবাসিকে গুলি করে হত্যা করে। উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্ঠিত উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের দাগারকুটি গ্রামের ঘুমন্ত এসব নিরীহ মানুষকে [...]

The post আজ হাতিয়া গণহত্যা দিবস appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
আব্দুল মালেকঃ
আজ ১৩ নভেম্বর ‘হাতিয়া গণহত্যা দিবস’। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক-হানাদার বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় নিরীহ ৬ ’শ ৯৭ জন গ্রামবাসিকে গুলি করে হত্যা করে। উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্ঠিত উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের দাগারকুটি গ্রামের ঘুমন্ত এসব নিরীহ মানুষকে ধরে এনে পাকিস্তানী হায়েনারা নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে হত্যা করে।

স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে জঘন্যতম নারকীয় এ হত্যাকান্ডের ইতিহাস জাতীয় পর্যায়ে তেমন গুরুত্ব না পেলেও উলিপুরে মানুুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে। আজও নিহত শহীদদের স্বজনরা খুঁজে ফিরে তাদের আপনজনকে।

দাগারকুটি গ্রামটিকে ঘিরে স্মৃতিসৌধ নির্মান করে এলাকার মানুষজন প্রতি বছর শহীদদের স্মরণ করে আসছিল। কিন্তু করালগ্রাসী ব্রহ্মপূত্র নদ দাগারকুটি গ্রামটিই তার বুকে ধারন করে নিয়েছে। বর্তমানে অনন্তপুর বাজারের পশ্চিম দিকে নতুন করে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে দিবসটি পালন করে আসছেন শহীদ পরিবার গুলোসহ উলিপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

উপজেলা প্রশাসন দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা যুদ্ধের এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ হয়তো মানুষের হৃদয় থেকে মুছে যাবে, কিন্তু শহীদের স্বজনরা তাদের আপনজনদের স্মরন করবেন সারাজীবন নিরবে-নিভৃতে। গণহত্যার শিকার শহীদ পরিবার গুলোর দাবী হাতিয়া দিবস জাতীয় পর্যায়ে যথাযোগ্য মর্যদায় পালনসহ ক্ষতিগ্রস্থ শহীদ পরিবার গুলোকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পূনর্বাসন করা হউক।

১৯৭১ সালের সেই নারকীয় রক্তঝরা দিনটি ছিল ২৩ রমজান, শনিবার। গ্রামের বেশীর ভাগ মানুষ সেহরীর খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, কেউ ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এরই মধ্যে ফজরের নামাজের আযান ধ্বনিত হচ্ছে মসজিদে মসজিদে। নামাজের প্রস্তুতি নিতে অজুও সেরে ফেলেছেন অনেকে। হঠাৎ পাকিস্তানী হায়েনার মর্টার সেল আর বন্দুকের অবিরাম গুলি বর্ষনে প্রকম্পিত হয়ে দাগারকুটি গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলো। গ্রামগুলোর মানুষজন কিছু বুঝে উঠার আগেই পাকিস্তানী হায়েনা ও  তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনী মিলে নিরীহ গ্রামের বাড়ী-ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর সাথে চলতে থাকে লুটপাঠ ও নির্যাতন।

আকস্মিক এ পরিস্থিতিতে এলাকার নিরীহ মানুষজন পাগলের মতো এলোপাথাড়ী ছোটাছুটি শুরু করেন। পাকিস্তানী বাহিনীর ছোঁড়া বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষনে মানুষজন জীবন বাঁচতে পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতসহ ঝোঁপ-জঙ্গলে শুয়ে জীবন বাঁচানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে। অনেকে ব্রহ্মপূত্র নদে ঝাঁপ দিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু অসহায় বৃদ্ধ আর শিশুদের আর্তচিৎকারে এলাকার আকাশ-বাতাশ ক্রমেই ভারী হয়ে উঠে। এসব অসহায় গ্রামবাসীর জীবন বাঁচানোর চেষ্টা মহুর্তেই শেষ হয়ে যায়।

পাক-হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সহযোগীতায় আত্মগোপন করা মানুষগুলোকে ধরে নিয়ে এসে দাগারকুটিতে জড়ো করে হাত-পা বেঁধে নির্দয় ভাবে গুলি করে হত্যা করে। তাদের এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ থেকে সেদিন বৃদ্ধ ও মায়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা শিশুটিও রক্ষা পায়নি। দিনব্যাপী চলে পাক-হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও অগ্নিসংযোগ। আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে যায় হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর, দাগারকুটি, হাতিয়া বকসি, রামখানা ও নয়াদাড়া গ্রামের শত শত ঘর-বাড়ী। মহুর্তেই গ্রামগুলো পরিনত হয় ধ্বংস স্তুপে। সেগুলো আজ শুধুই স্মৃতি।

The post আজ হাতিয়া গণহত্যা দিবস appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>