মতামত Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?cat=26 কুড়িগ্রাম জেলার তথ্য ও সংবাদ Thu, 23 Nov 2023 06:12:28 +0000 en-US hourly 1 https://www.ulipur.com/wp-content/uploads/2022/10/1665889308.png মতামত Archives - স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র https://www.ulipur.com/?cat=26 32 32 মাদক প্রতিরোধে মুক্ত মত https://www.ulipur.com/?p=28443 Thu, 23 Nov 2023 06:12:28 +0000 https://www.ulipur.com/?p=28443 ।। নুরনবী মিয়া ।। আমার জন্মটাই ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামে। কিছু বুঝতে শেখার পর থেকেই দেখছি বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য। চোখের সামনেই বসেছিল মাদকের হাট। দেখেছি অনেক ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। এখন নজরে না এলেও অগোচরে সেসব থেমে নেই। বর্তমান সমাজে মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে অনেক ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে। মাদকের ভয়াল থাবায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তরুণ যুবসমাজ। [...]

The post মাদক প্রতিরোধে মুক্ত মত appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
।। নুরনবী মিয়া ।।
আমার জন্মটাই ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামে। কিছু বুঝতে শেখার পর থেকেই দেখছি বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য। চোখের সামনেই বসেছিল মাদকের হাট। দেখেছি অনেক ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। এখন নজরে না এলেও অগোচরে সেসব থেমে নেই। বর্তমান সমাজে মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে অনেক ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে। মাদকের ভয়াল থাবায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তরুণ যুবসমাজ। দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মাদকাসক্তের তালিকা। এ তালিকায় স্থান দখলের প্রতিযোগিতা করছে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। এসব কথা কারও অজানা থাকার কথা নয়। মাদক প্রতিরোধে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও সুধী সমাজ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেটাও আমরা দেখেছি। দেশের আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার লোকজন মাদকের ছোট-বড় চালান ও চোরাচালানকারীদের গ্রেফতার করে আইনের কাছে সোপর্দ করছে। তবুও কিন্তু মাদকের চোরাচালান থামছে না। দেশের অভ্যন্তরে যদি চাহিদা থাকে, তাহলে আমদানি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। এজন্য প্রয়োজন মাদক সেবনকারীদের নেশায় আসক্তি থেকে ফিরিয়ে আনা। সেবনকারীর সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারলে মাদকের চোরাচালানও অনেকাংশে কমে যাবে। এতে অর্থ পাচার থেকে মুক্তি পাবে দেশ।

মাদক প্রতিরোধ করার জন্য অনেক সভা-সেমিনার অনুষ্ঠিত হতে দেখেছি। সভা-সেমিনারে অনেক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ পদবির ব্যক্তিবর্গসহ গুণীজনদের উপস্থিতি লক্ষ্য করেছি। আমি নিজেও উপস্থিত থেকে অনেক কথা শুনেছি। বিভিন্ন জায়গায় মাদক প্রতিরোধে অনেক স্লোগান দেখেছি। তবে সেসব ছিল অন্যান্য সভা-সেমিনারের থেকে একেবারেই আলাদা। আমি ভুট্টা চাষীদের সেমিনারে গিয়ে দেখেছি সেখানে অনেক ভুট্টা চাষী ছিলেন। পাট চাষীদের কর্মশালায় গিয়ে দেখেছি সেখানে প্রায় সবাই পাট চাষী। সাংবাদিকতা বিষয়ক কর্মশালায় গিয়ে দেখেছি সবাই সাংবাদিক। কিন্তু মাদক প্রতিরোধের সভা-সেমিনারে যাওয়ার আগেই শুনি প্রোগ্রামে কিছু ভালো ছেলে লাগবে। সেখানে গেলে দেখা যায় সমাজের সুধীজন, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ। সেখানে কোনো মাদকাসক্ত লোকের চিহ্ন পর্যন্ত থাকে না। মাদকাসক্তরা এরকম প্রোগ্রামের নাম শুনলেই, তিন’শ গজ দূর দিয়ে পাশ কেটে চলে যায়। এমনকি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকের বিরুদ্ধে আলোচনা হলে সেখানেও মাদকাসক্ত শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকে না। খোঁজ খবর নিলে জানতে পারবেন মাদকের কুফল সম্পর্কে তারা তেমন একটা অবগত নয়।

দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ ও গভীর বিশ্লেষণে আমি বেশ কিছু বিষয় উপলব্ধি করেছি। মাদকের করাল গ্রাস থেকে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করা যেতে পারে। প্রথমত আমাদেরকে জানতে হবে, শিক্ষার্থীর হাতে মাদকটা আসছে কীভাবে? কারা সরবরাহ করছেন, কারা কারা যুক্ত আছেন, বিষদ ঘটনা উপলব্ধি করার পর ঐ শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করতে হবে। নিশ্চিত সে নেশার দিকে ধাবিত না হয়ে সুস্থ জীবনে ফিরে আসবে। কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তি যখন মাদকের কুফল সম্পর্কে সবকিছু জানতে ও বুঝতে পারে, তখন সে ঠিকই সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে চেষ্টা করে এবং সুস্থ জীবনে ফিরে আসে। তবে তাদেরকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে গেলে আরও অনেক গতিপথ জানতে হবে। অন্যান্য শ্রেণি-পেশার লোকজনের চেয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া দরকার। মাদক প্রতিরোধে শিক্ষার্থীরাই অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের হাতে যারা মাদক সরবরাহ করছেন এবং যাদের সঙ্গে সেবন করছেন তাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী নন। তবে কেন তারা শিক্ষার্থীদের হাতে মাদক তুলে দেন, এবং প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে যে, তারা মাদক সেবনের অর্থ যোগাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর নির্ভর করে। শিক্ষার্থীদের আরও বেশি আকর্ষিত করতে সহজ শর্তে নানান রোমান্টিক কুপ্রস্তাব আদান-প্রদানসহ বিভিন্ন নোংরামির আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে রাস্তার মোড়ে অপেক্ষার প্রহর গুনে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বুঝতেই পারেনা যে এই বখাটে মাদক সেবীরা তাদের সাথে বন্ধুত্বের ছলনা করে টিফিনের টাকায় ভাগ বসাচ্ছে। এজন্য যেসব শিক্ষার্থী মাদক সেবন করে তাদেরকে খুঁজে বের করে বন্ধুসুলভ আচরণের মাধ্যমে সবকিছু জেনে নিতে হবে। তারপর সবকিছু জেনে বাস্তবতার আলোকে তাদের কাউন্সিলিং করতে হবে। তাদেরকে সঠিকভাবে বোঝানো সক্ষম হলে তারা মাদক সেবন থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবে এবং সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। সেইসাথে শিক্ষার্থীদের হাতে মাদক তুলে দেয়া বখাটেদেরকে চিহ্নিত করে আইনের কাছে সোপর্দ ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার।

এখানে অনেক সাজ নেয়া সুধীজন বাধা হয়ে সামনে আসার চেষ্টা করবে। তারা বিভিন্ন যুক্তি নিয়ে আসবে মাদক ছড়াছড়ির পক্ষে সাফাই গাইতে। কারণ এতে তাদের ব্যবসায় ধস নেমে আসার শঙ্কা করেন তারা। সমাজের অনেক মুখোশধারী পতি আছেন, অরাজকতা না হলে তাদের রুজি রোজগার হয় না। সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার মাধ্যমে অনেকের মুখে আহার জোটে। তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করে জনসম্মুখে নিয়ে আসতে হবে।

আমি মনে করি, আগামীর প্রজন্মকে মাদকমুক্ত একটি সুন্দর সমাজ উপহার দিতে সমাজের দায়িত্বশীল ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঠিক পদক্ষেপই যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। তবে আমাদেরকে সঠিক পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে ভালো করে জানতে হবে। বিশেষ কিছু কৌশল অবলম্বন করেই মাদক প্রতিরোধ করা সম্ভব।

লেখক:
নুরনবী মিয়া
ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম।

The post মাদক প্রতিরোধে মুক্ত মত appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
চ্যাটজিপিটির প্রভাবে যে ধরনের চাকরিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে https://www.ulipur.com/?p=23303 Sat, 25 Mar 2023 06:52:59 +0000 https://www.ulipur.com/?p=23303 || রূপম রাজ্জাক ||চ্যাটজিপিটি নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনটির অসামান্য সক্ষমতা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। এত অল্পসময়ে এতটা হইচই ফেলে দেয়ার মতো প্রযুক্তি সাম্প্রতিক সময়ে আর দ্বিতীয়টি নেই। এর সক্ষমতা যখন অনেক কাজকে সহজ করে দিচ্ছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মনে শঙ্কা কাজ করছে যে হয়তোবা অনেক ধরনের কাজে এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হলে অনেকেই চাকরি হারাতে পারে। বিষয়টি [...]

The post চ্যাটজিপিটির প্রভাবে যে ধরনের চাকরিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
|| রূপম রাজ্জাক ||
চ্যাটজিপিটি নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনটির অসামান্য সক্ষমতা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। এত অল্পসময়ে এতটা হইচই ফেলে দেয়ার মতো প্রযুক্তি সাম্প্রতিক সময়ে আর দ্বিতীয়টি নেই। এর সক্ষমতা যখন অনেক কাজকে সহজ করে দিচ্ছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মনে শঙ্কা কাজ করছে যে হয়তোবা অনেক ধরনের কাজে এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হলে অনেকেই চাকরি হারাতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী আলোচনা চলছে। বিশেষ করে গুগলের মতো টেক জায়ান্ট চ্যাটজিপিটির অনুকরণে অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে আসার ঘোষণা দেয়ার পরে এই বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এর মূল প্রভাব পড়বে দাপ্তরিক, প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত কাজের ক্ষেত্রগুলোতে (যেগুলোকে হোয়াইট-কলার কাজ বলা হয়) যেসব কাজে নতুনত্বের প্রয়োজন তুলনামুলকভাবে কম। যুক্তরাষ্ট্রের রচেস্টার ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক পেংচেং শি নিউইয়র্ক পোষ্টকে বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হোয়াইট-কলার চাকরিজীবিদের জায়গা দখল করতে শুরু করেছে। তার মতে, এটি কারও পক্ষেই থামানো সম্ভব না।

তো আরেকটু দেখে নেয়া যাক চ্যাটজিপিটির কারণে আগামী দিনে কোন কোন ধরনের চাকরির ক্ষেত্রগুলোতে মানুষের প্রয়োজন কমে আসতে পারে।

গ্রাহক সেবাঃ
যেহেতু চ্যাটজিপিটির প্রধান বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে পূর্বে ব্যবহৃত কোটি কোটি প্রশ্ন ও উত্তরকে কাজে লাগিয়ে সবচেয়ে ভালো উত্তরটি দেয়া, তাই গ্রাহক সেবার মতো কিছু খাত যেখানে ইতিমধ্যেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে সেসব ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখবে। মানুষের চাইতেও দ্রুততার ও শুদ্ধতার সাথে উত্তর দেয়ার কাজটি চ্যাটজিপিটি করতে পারছে বলে সামনের দিনগুলোতে কর্মসংস্থানের সংকোচন হবে। তবে অনেকের মতে, স্পর্শকাতর অনেক ব্যাপারেই মানুষের বিচারবুদ্ধির উপর নির্ভর করতেই হবে। তবে কর্মসংস্থান কমে যাবে এ ব্যাপারে মোটামুটি সবাই একমত।

কনটেন্ট লেখা ও সম্পাদনাঃ
বিজ্ঞাপন সম্পর্কিত কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে, আইনি সহায়তায়, সাংবাদিকতায় বা কারিগরি বিভিন্ন বিষয়সহ দৈনন্দিন নানান ক্ষেত্রে লেখালেখি বা সম্পাদনায় স্বাতন্ত্রতা আনতে যে সময় ও শ্রম দিতে হয়, চ্যাটজিপিটি তা নিমিষেই করে দিতে পারছে। ইতিমধ্যেই ব্রাউজারভিত্তিক বিভিন্ন এক্সটেনশনসহ অনেক সফটওয়ার চ্যাটজিপিটিকে ব্যবহার করে দ্রুততার সাথে কনটেন্ট তৈরি করে দিচ্ছে। কোনো একটি বিষয়কে স্পষ্ট করে চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞেস করলে সে জানিয়ে দেয় তার বিবরণে কতটি অধ্যায় বা প্যারা থাকা উচিত, সেগুলোর নাম বা হেডলাইন কি কি হবে, এমনকি কোন অধ্যায় বা প্যারার বর্ণনায় কি লেখা উচিত ইত্যাদি সবকিছুই চ্যাটজিপিটি করে দিতে পারছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক প্রতিষ্ঠান ভাবতে শুরু করেছে কিভাবে ১০ জনের কাজকে ২ জন দিয়ে করানো যায়। কারণ, মূল লেখার কাজটি চ্যাটজিপিটি করে দিলে শুধুমাত্র সেগুলোকে পরীক্ষা করে সমন্বয় করতে খুব বেশি জনবলের প্রয়োজন হবে না।

সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টঃ
চ্যাটজিপিটি অত্যন্ত সুচারুভাবে কোড লিখে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, সাথে ধারা বর্ননাও লিখে দিচ্ছে। ফলে সঠিক প্রম্পট ব্যবহার করে চ্যাটজিপিটি থেকে সহজেই কোড লিখে নেয়া যাচ্ছে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষার। চ্যাটজিপিটি হয়তো পুরো একটি সফটওয়ার প্রকল্প করে দিতে পারছে না, কিন্তু প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রয়োজনীয় স্বাধীন কোড ব্লক লিখে দিতে পারছে। ফলে একজন মোটামুটি দক্ষ প্রোগ্রামার বা টিম লিডার চাইলেই টিমে স্বাভাবিকের চাইতে কম সংখ্যক সদস্য দিয়েই অনেক কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। বিশেষ করে জুনিয়র বা এন্ট্রি লেভেলের প্রোগ্রামারের প্রয়োজন অনেকাংশে কমে যাবে। বড় বা প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলো হয়তো দীর্ঘমেয়াদের ভাবনা মাথায় রেখে জুনিয়র বা এন্ট্রি লেভেলের প্রোগ্রামার নিয়োগ অব্যাহত রাখবে, কিন্তু ছোট কোম্পানিগুলো ব্যয় কমাতে চ্যাটজিপিটির সহায়তা নিবেই। ফলে চাকরির বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে।

ওয়েবসাইট ও গ্রাফিক ডিজাইনঃ
সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের মতোই প্রভাব পড়বে এই ক্ষেত্রেও। ইতিমধ্যেই চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে মোটামুটি মানের ওয়েবসাইট তৈরি করা যাচ্ছে খুব সামান্য সময়ের মধ্যে। ফলে দক্ষ পেশাজীবী যারা যাচাই বা মান নিয়ন্ত্রনের কাজ করেন তাদের বাইরে জুনিয়র পর্যায়ের লোকবল লাগবে না। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর চিন্ময় হেজের মতে, এই কাজের পেশাজীবীগণ যারা সাধারণ পর্যায়ের বা অল্প জটিল কাজ করে থাকেন তারা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বেন।

শিক্ষকতাঃ
একজন শিক্ষক ক্লাসরুমে নির্দিষ্ট সময়ে যতটুকু পড়াতে পারেন, চ্যাটজিপিটি তার চাইতে অনেক বেশি তথ্য বা বেশি রকমের সমাধান উপস্থাপন করতে পারে। গবেষকরা বলেছেন, ভবিষ্যতের ক্লাসরুমে শিক্ষকের ভুমিকায় আসবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর এর পরিচালনায় একজন ইন্সট্রাক্টরই যথেষ্ট হবে। অধ্যাপক পেংচেং শি’র মতে, “চ্যাটজিপিটি ইতিমধ্যেই ক্লাসে পড়াতে পারছে। যদিও তার জানায় কিছু কিছু ভুল আছে কিন্তু প্রশিক্ষনের মাধ্যমে তা সহজেই উন্নতি করা সম্ভব।”

আর্থিক, গবেষণা ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা খাতঃ
বিভিন্ন ধরনের গবেষণা, তথ্য উপাত্ত যাচাইয়ের কাজ, আর্থিক বিশ্লেষণ, বাজার বিশ্লেষণ ও এর প্রবণতার চিত্র, তথ্যের ভিত্তিতে প্রেডিকশন বা ভবিষ্যদ্বাণী, চাকরির প্রার্থী বাছাই ও নিয়োগ প্রক্রিয়া ইত্যাদি কাজের ক্ষেত্রগুলোতে যে লোকবল দিয়ে তথ্য সংগ্রহ, যাচাই ও সমন্বয়ের কাজ করতে হয়, তার বৃহৎ অংশেরই কাজ প্রতিস্থাপন করে দিবে চ্যাটজিপিটির সক্ষমতা। চ্যাটজিপিটি তার ভান্ডার থেকে প্রায় নির্ভুল তথ্য দিতে পারে। ফলে এসব খাতে অনেক কম জনবলের প্রয়োজন পড়বে।

বাংলাদেশে এর প্রভাবঃ
আমাদের দেশের স্থানীয় বাজারের গতানুগতিক কাজের ক্ষেত্রগুলোতে এর প্রভাব হয়তো সহসাই পড়বে না। কিন্তু যারা দেশে বসে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত আছেন, তাদের উপর প্রভাব আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পড়তে শুরু করবে বলে ধারনা করা যায়। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের মত, আগামী ৩-৫ বছরের মধ্যে অনেক ধরনের কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বয়ংক্রিয় ব্যবহার বেড়ে যেতে বাধ্য। তখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার ও প্রয়োগে দক্ষ জনবলের প্রয়োজন বাড়বে।

তাই আপনার কাজ দেশে হোক বা বিদেশে হোক, নিজের বর্তমান কাজকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের মাধ্যমে আরও গতিশীল করার ব্যাপারে ভাবুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইদানীং একটি কথা বেশ প্রচলিত – “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরাসরি আপনাকে প্রতিস্থাপন করবে না। করবে কেউ একজন ব্যক্তি যে কিনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঠিক ব্যবহার জানে।”।

(তথ্যসূত্রঃ নিউইয়র্ক পোষ্ট, ফোর্বস ম্যাগজিন ও বিজনেস ইনসাইডার।)

লেখক –
রূপম রাজ্জাক
তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও সাংবাদিক
(ডেটা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত)
লন্ডন, যুক্তরাজ্য।

The post চ্যাটজিপিটির প্রভাবে যে ধরনের চাকরিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
দেশে বায়ুদূষণের ভয়াবহতা, সরকারি উদ্যোগের ঘাটতি ও জনগণের করণীয় https://www.ulipur.com/?p=22619 Mon, 20 Feb 2023 12:31:30 +0000 https://www.ulipur.com/?p=22619 || রূপম রাজ্জাক ||আমাদের দেশে সাধারণত রাজধানী ঢাকার বায়ুর মানের সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) নিয়ে আলোচনা হয়। সেটাও হয় যখন সেই AQI সর্বোচ্চ মাত্রায় খারাপ থাকে। আর এসব আমরা জানতে পারি শুধুমাত্র যখন জাতীয় পত্রিকাগুলো লেখে বা নিউজ করে। কিন্তু জাতীয় গণমাধ্যম স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে প্রতিদিন নিউজ করে না। যেদিন বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ে [...]

The post দেশে বায়ুদূষণের ভয়াবহতা, সরকারি উদ্যোগের ঘাটতি ও জনগণের করণীয় appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
|| রূপম রাজ্জাক ||
আমাদের দেশে সাধারণত রাজধানী ঢাকার বায়ুর মানের সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) নিয়ে আলোচনা হয়। সেটাও হয় যখন সেই AQI সর্বোচ্চ মাত্রায় খারাপ থাকে। আর এসব আমরা জানতে পারি শুধুমাত্র যখন জাতীয় পত্রিকাগুলো লেখে বা নিউজ করে। কিন্তু জাতীয় গণমাধ্যম স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে প্রতিদিন নিউজ করে না। যেদিন বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ে যায় সেদিন হয়তো নিউজ করে। তবে আমরা কি জানি ঢাকার বাইরের শহরগুলোতেও এয়ার কোয়ালিটি ইনডেএক্সের অবস্থা খারাপের মধ্যেই থাকে? AQI পরিসংখ্যান বলছে, যারা ঢাকায় থাকেন না তাদের নিজেদেরকে খুব একটা নিরাপদ ভাবার কারণ নেই। কারণ ঢাকার বাইরের বায়ুর দূষণ ঢাকার মতো ‘অতিরিক্ত খারাপ’ না হলেও স্বাস্থ্যকর অবস্থায় নেই।

AQI কে মূলত কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। ইনডেক্স ০-৫০ কে ভালো ধরা হয়। ৫১-১০০ কে মোটামুটি ভালো ও ১০১-১৫০ কে সংবেদনশীল শ্রেণী মানুষের জন্য ক্ষতিকর/অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। এরপরের ধাপে ১৫১-২০০ কে সবার জন্যই অস্বাস্থ্যকর হিসেবে ধরা হয়। AQI ইনডেক্স ২০১-৩০০ কে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বিবেচনা করা হয়। সর্বশেষ গ্রুপে ইনডেক্স ৩০১ ও তার বেশি হলে তা বিপজ্জনক বলে বিবেচনা করা হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের AQI এর তথ্য ঘাটলে দেখা যায় বায়ুদূষণ প্রায় সবসময়ই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে থাকে।

AQI এর বিভিন্ন স্তর

আমি যখন এই লেখাটি লিখছি (বাংলাদেশ সময়, ২০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার সকাল ৭টায়) তখন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের ৩০টি জেলার AQI মাত্রা দেখে একটিতেও ১০০ এর নিচে পাইনি। বরং বেশ কয়েকটি জেলায় এই মাত্রা ১৫০ এর অনেক উপরে ছিল। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক, যেখানে AQI ছিল ৯৯। তার মানে কমবেশি অস্বাস্থ্যকর মানের বায়ুই বিরাজ করছে গোটা দেশে।

দেশের কয়েকটি অঞ্চলের আজকের AQI

বায়ুদূষণ অনেক কারণেই হয়। অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে হয় তা সবার জানা। যানবাহন ও কৃষিবর্জ্যের ধোঁয়া থেকে হয়। ফসলে/বাগানে কীটনাশক ব্যবহারের ফলেও হয়ে থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার বাইরে অসংখ্য অপরিকল্পিত ও অবৈধ ইটভাটার সৃষ্ট দুষিত বায়ু দেশের অন্যতম বড় পরিবেশ-ঘাতক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে দেশের প্রত্যন্ত অনেক গ্রামেও বায়ুর মান মারাত্মক রকমের খারাপ হয়েছে।

একটি গবেষণায় এসেছে, ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব শহরের বায়ু বছরে ৩৬৫ দিনের ৩০০ দিনই মারাত্মক দূষিত অবস্থায় থাকে। গবেষকরা বলছেন, এরকম AQI পরিস্থিতিতে একজন মানুষের আয়ু ৮-১০ বছর পর্যন্ত কমতে পারে এবং জীবদ্দশায় বিভিন্ন রোগশোক লেগেই থাকবে। অন্য একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর বায়ুদূষণে প্রায় ৮৮ হাজার মানুষ মারা যান। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। বায়ুদূষণের ফলে শরীরে যেসব বস্তুকণা প্রবেশ করে তা সর্দি, কাশি, যক্ষ্মা ও নিউমোনিয়ার মতো রোগের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটায়। মেজাজ খিটখিটে তো বটেই এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতাও চলে আসে।

বলছিলাম AQI এর উপর গণমাধ্যমের নিউজ নিয়ে। যেহেতু প্রতিদিন নিউজ হয়না, তাই অনেকসময় AQI খুব খারাপ থাকলেও জনগণ তা জানতেই পারে না। কিন্তু এটি সবসময়ই জানা যেতো যদি সরকার নিজ দায়িত্বে দেশের বিভিন্ন শহরের/জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ডিসপ্লে বসিয়ে রিয়্যাল টাইম AQI সহ এ সম্পর্কিত তথ্য শেয়ার করতো। আমাদের দেশের সরকার বায়ুদূষণ ঠেকাতে পারেনি বা দৃশ্যমান উদ্যোগও নেয়নি। কিন্তু দূষিত বায়ুর ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে হালনাগাদ তথ্য দিতে পারতো। এ কাজটি করলে কোটি কোটি মানুষ সাবধান হতে পারতো বা ক্ষতির পরিমাণ কমাতে নিজেরাই সক্রিয় হতো।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শহরে শহরে রিয়্যাল টাইম AQI দেখানোর ডিসপ্লে থাকে যেখানে বিভিন্ন সচেতনতামূলক পরামর্শও দেয়া থাকে। উন্নত দেশগুলো এ ব্যাপারে খুবই তৎপর। এমনকি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের রাজধানী দিল্লিতেও সেরকম ব্যবস্থা আছে। সেদেশে এই বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা সমালোচনা হয়ে থাকে এবং সরকারও বিভিন্ন রকমের উদ্যোগ নেয়। শুধু তাই নয়, AQI ইনডেক্সের মাত্রার উপর ভিত্তি করে মাঝে মাঝে সরকার স্কুলগুলো বন্ধ ঘোষণা করে। কারণ দূষিত বায়ু শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়া সর্বসাধারণের জন্য জরুরি দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে সেখানকার সরকার। আমাদের দেশেও সরকার ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে। শিশু/বৃদ্ধ বা প্রয়োজনে সর্বসাধারণের জন্য আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। সরকারি ওয়েবসাইট এমনকি টেলিভিশনের স্ক্রলেও সবসময়ের জন্য সতর্কতা বার্তা দেখানো যেতে পারে। জনস্বার্থে এ ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। আশা করি শীঘ্রই সরকারের সুবিবেচনার পরিচয় দেবে।

দিল্লীর রাস্তায় AQI ডিসপ্লে

তবে সরকার করুক বা না করুক, সচেতন মানুষ নিজেরাই কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে চলতে পারে। যেমন – আমরা নিজেরাই এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের উপর নজর রাখতে পারি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে চোখ রেখে বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রায়ই ঢাকার AQI এর খোজ রাখি IQAir নামক একটি অ্যাপের মাধ্যমে (স্ক্রিনশট সংযুক্ত)। অ্যাপ বা ওয়েবসাইট শুধু ইনডেক্স দেখাবে না, পাশাপাশি কতগুলো রিকমেন্ডেশনও দিয়ে থাকে। যেমন- যেদিন AQI খুব খারাপ থাকবে সেদিন ঘরের বাইরের কাজ কম রাখতে হবে বা পারতপক্ষে এড়িয়ে চলতে হবে। সামর্থ্য থাকলে ঘরে বায়ু পরিশোধক ব্যবহার করার পরামর্শও দেয়া হয়। বাইরে যদি যেতেই হয় সেক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয়।

মোবাইল অ্যাপে ঢাকার আজকের AQI

বিশুদ্ধ বায়ু সকলের মৌলিক অধিকার। তবে তা নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও সকলের সচেতনতা প্রয়োজন।


লেখক –
রূপম রাজ্জাক
তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও সাংবাদিক
লন্ডন, যুক্তরাজ্য।

The post দেশে বায়ুদূষণের ভয়াবহতা, সরকারি উদ্যোগের ঘাটতি ও জনগণের করণীয় appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
এসএসসি পাসের পর সাধারণ নাকি কারিগরি শিক্ষা? https://www.ulipur.com/?p=21077 Fri, 02 Dec 2022 16:29:13 +0000 https://www.ulipur.com/?p=21077 ।। ডা. এ.টি.এম আব্দুর রাজ্জাক ।।মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল গত সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলের হরিষে-বিষাদ শেষে এখন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে বড় প্রশ্ন, এরপর কি করব? কোন পথে আগালে স্বপ্ন ছোঁয়া যাবে? এখনই সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কারণ এ সিদ্ধান্তের উপর অনেককিছু নির্ভর করবে। এই প্রশ্নের সহজ কোনো উত্তর দেয়া [...]

The post এসএসসি পাসের পর সাধারণ নাকি কারিগরি শিক্ষা? appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
।। ডা. এ.টি.এম আব্দুর রাজ্জাক ।।
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল গত সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলের হরিষে-বিষাদ শেষে এখন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে বড় প্রশ্ন, এরপর কি করব? কোন পথে আগালে স্বপ্ন ছোঁয়া যাবে? এখনই সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কারণ এ সিদ্ধান্তের উপর অনেককিছু নির্ভর করবে।

এই প্রশ্নের সহজ কোনো উত্তর দেয়া যায় না। তবে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি জিপিএ ৪.০০ পয়েন্ট বা তার কম যারা পেয়েছে তাদের জন্য সাধারণ শিক্ষার দিকে না যাওয়া ভালো। যারা সব বিষয়ে জিপিএ ৫.০০ পেয়েছে এবং স্বচ্ছল পরিবারের তারা সাধারণ শিক্ষার দীর্ঘ পথে পা বাড়াতে পারে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্যমতে বাংলাদেশে ৪৭ শতাংশ স্নাতক পাস শিক্ষার্থী বেকার। বিশ্বে সর্বাধিক বেকারত্বের দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২তম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ব্যাপকভাবে কারিগরি শিক্ষার দিকে অগ্রসর হতে হবে। দেশে কারিগরি শিক্ষার হার বর্তমানে মাত্র ১৪% যা আগামী ২০৩০ সালে ৩০% এবং ২০৪০ সালে ৪০% করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।

সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে এসএসসি/সমমান পাস শিক্ষার্থীদের জন্য ৩-৪ বছর মেয়াদি বিভিন্ন বিষয়ে লেখাপড়া শেষে দেশে-বিদেশে সরকারি বা বেসরকারি চাকরিতে তুলনামূলক সহজ সুযোগ রয়েছে।

দেশে সরকারি পলিটেকনিক ৪৯টি (১১ ধরনের ডিপ্লোমা কোর্স রয়েছে), আইএইচটি ৮টি (প্যাথলজি ও এক্সরে টেকনোলজিস্ট), ম্যাটস ১১টি (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট), নার্সিং ইন্সটিটিউট ৪৩টি ও মিডওয়াইফারি ৩৮টি রয়েছে। এছাড়াও ভেটে্রিনারি, ফরেস্ট্রি, গ্ল্যাস এন্ড সিরামিক,লেদার, ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি সহ আরও অনেক বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

একজন শিক্ষার্থীর নিজ আগ্রহে এসব বিষয়ে এখনই খোঁজ নেয়া শুরু করতে হবে। অনেকেই এটাকে অবজ্ঞার চোখে দেখবে। সেসব আমলে না নিয়ে ভালো লাগার বিষয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির চেষ্টা করতে হবে। পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে পারলে নিজেকে একজন দক্ষ মানুষে পরিণত করা সহজ হবে। আমার জানা মতে সৎ, দক্ষ ও পরিশ্রমী মানুষের কাজের অভাব হয় না।

লেখকঃ ডা. এ.টি.এম আব্দুর রাজ্জাক, অর্থোপেডিক এবং স্পাইন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সার্জন
সাবেক বিভাগীয় প্রধান, সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড (সিআরপি)।

The post এসএসসি পাসের পর সাধারণ নাকি কারিগরি শিক্ষা? appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের করণীয় https://www.ulipur.com/?p=14784 Mon, 13 Sep 2021 09:09:52 +0000 https://www.ulipur.com/?p=14784 ।। নিউজ ডেস্ক ।। প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশে একনাগাড়ে এত দীর্ঘ সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়নি। স্কুল চলাকালীন সময় শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণীকক্ষে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, যা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, একটি জায়গায় যখন সবাই মাস্ক পরে তখন সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় প্রায় [...]

The post করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের করণীয় appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
।। নিউজ ডেস্ক ।।
প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশে একনাগাড়ে এত দীর্ঘ সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়নি। স্কুল চলাকালীন সময় শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণীকক্ষে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, যা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, একটি জায়গায় যখন সবাই মাস্ক পরে তখন সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় প্রায় ৯৫ শতাংশ। তবে এ ক্ষেত্রে সবাইকেই সঠিকভাবে সঠিক মাস্কটিই ব্যবহার করতে হবে। তিন স্তরের সার্জিক্যাল মাস্ক সবচেয়ে ভালো, তবে পাতলা কাপড়ের তিন স্তর বিশিষ্ট মাস্কও কার্যকরী।

এখন কথা হলো, স্কুল-কলেজের সব শিক্ষার্থীই কি এ ধরনের মাস্কের ব্যবস্থা করতে পারবে? সবারই কি সেই আর্থিক সামর্থ্য আছে? সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যয়বহুল এবং একবার মাত্র ব্যবহার্য। সেক্ষেত্রে কাপড়ের মাস্ক ধুয়ে ব্যবহার করা যায় বার বার, তাই সাশ্রয়ী। যেসব শিক্ষার্থী সঠিক মাস্কের ব্যবস্থা করতে পারবে না, সরকার এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত হবে সেসব শিক্ষার্থীদের জন্য কাপড়ের মাস্ক সরবরাহ করা। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ৩টি করে কাপড়ের মাস্ক সরবরাহ করা যেতে পারে, যা তারা ধুয়ে বার বার ব্যাবহার করবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীকে মাস্ক কীভাবে ব্যাবহার করতে হয় তার ওপর ক্লাস শুরুর প্রথম দিনই প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

প্রতিটি শ্রেণীকক্ষকে এক একটি ‘বাবল’ হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং প্রতিটি বাবলের সংক্রমণ পরিস্থিতি মনিটর করতে হবে। একটি বাবলের শিক্ষার্থীরা আরেকটি বাবলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশতে পারবে না। ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলেও প্রত্যেক শিক্ষককে সপ্তাহে দুই বার বাধ্যতামূলক র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কোভিড টেস্ট করতে হবে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই। সরকার এ ক্ষেত্রে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কোভিড টেস্ট কীট সরবরাহ করতে পারে। র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কীট এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে করে নিজে নিজেই খুব সহজেই এই টেস্ট করা যায় এবং আধাঘণ্টার ভেতরেই রিপোর্ট জানা যায়। টেস্ট কীটের সঙ্গে বাংলা নির্দেশনা সরবরাহ করা যেতে পারে, যাতে ব্যবহারকারী সঠিকভাবে কীটটি ব্যবহার করতে পারে। যুক্তরাজ্যে মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীদের এই টেস্ট কীট সরবরাহ করা হয়েছে, যা দিয়ে তারা নিজেরাই সপ্তাহে দুই বার ঘরে বসেই কোভিড টেস্ট করছে। এ ছাড়াও, স্কুল এবং কলেজে আছে পর্যাপ্ত কীট, যা দিয়ে কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে নিয়মিত।

একটি বাবল বা শ্রেণীকক্ষের কোনো শিক্ষার্থীর করোনার কোনো প্রকার লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই ওই শিক্ষার্থীকে স্কুল-কলেজেই র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কীট দিয়ে টেস্ট করতে হবে। টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ আসলে গোটা বাবলকে ‘রেড বাবল’ হিসেবে গণ্য করে বাবলের সবাইকে সপ্তাহে দুইবার বাধ্যতামূলক কোভিড টেস্ট করতে হবে। যাদের পজিটিভ আসবে তাদেরকে ১০-১৪ দিনের আইসোলেশনে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাবলের বা শ্রেণীর সবাইকে আইসোলেশনে রাখার প্রয়োজন নেই বা পুরো ক্লাস সাসপেনশনের কোনো দরকার নেই।

কোভিড মহামারির সময় এভাবেই বিভিন্ন ধাপের টেস্ট পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমেই শিক্ষাদান কর্মসূচি চালু রাখা সম্ভব। আর এর জন্য দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কীট এবং মাস্ক। সরকার যেমন কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করছে সবার জন্য। ঠিক একইভাবে সরকারের উচিত র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কীট এবং কাপড়ের মাস্ক সরবরাহের মাধ্যমে জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সচল রাখার ব্যবস্থা করা। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের জন্য ভ্যাকসিন নয়, তাদের জন্য এখন সবচেয়ে দরকার মাস্ক এবং র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কীট। এক ডোজ ভ্যাকসিনের টাকায় অনেকগুলো মাস্ক এবং কীট কেনা সম্ভব।

১৬ বছরের নিচের শিশুরা সাধারণত মাইল্ড কোভিড বা অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষণবিহীন কোভিডে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ কারণেই স্কুল থেকে তারা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বাসার অন্যান্য সদস্যকেও সংক্রমিত করতে পারে। অতএব, এ ক্ষেত্রেও পারিবারিক পর্যায়ে কিছু সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি। যেমন: বাসায় যদি কোনো বৃদ্ধ বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি থাকেন যাদের কোভিড হলে তা মারাত্মক আঁকার ধারণ করতে পারে, তাদেরকে অবশ্যই দ্রুত ভ্যাকসিন দিতে হবে। যতদিন তাদের জন্য টিকার ব্যবস্থা না করা যায়, ততদিন তাদেরকে ‘শিল্ডিং’ বা রক্ষাবলয়ের মধ্যে রাখতে হবে, যাতে করে স্কুলগামী আক্রান্ত শিশুর কাছ থেকে তাদের কাছে ভাইরাস না যেতে পারে। স্কুলগামী শিশুদের কোভিড তিন দিনেই ভালো হয়ে যায়, কিন্তু বয়োবৃদ্ধদের কোভিড হলে মৃত্যু ঝুঁকি অনেক।

কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমেও স্কুল থেকে বাসায় করোনা সংক্রমণ বিস্তারের পথ অনেকাংশেই রোধ করা সম্ভব। যেমন: স্কুল-কলেজ থেকে ফেরার পর শিক্ষার্থীদের পরিধেয় বস্ত্র বা ইউনিফর্ম খুলে পৃথক স্থানে রাখতে হবে, যাতে তা ঘরের অন্যান্য সদস্যদের কাপড়-চোপড়ের সংস্পর্শে না আসে। স্কুল থেকে ফিরে হাত মুখ ও শরীরের উন্মুক্ত অংশ ভালো মতো সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

কোভিড মহামারি এত সহসা শেষ হচ্ছে না। আমাদেরকে করোনাভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে। এর জন্য দরকার সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিপর্যায়ে সম্মিলিত এবং বিজ্ঞানভিত্তিক কার্যকরী উদ্যোগ। যুক্তরাজ্যে গত আড়াই মাস ধরে দৈনিক গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন। দেশটিতে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের কাউকেই এখনও কোভিডের টিকা দেওয়া হয়নি। তারপরও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা আছে। আর এটা সম্ভব হচ্ছে স্কুল-কলেজে বিশেষ কোভিড স্বাস্থ্যবিধির প্রয়োগ, মাস্ক পরিধান এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কীটের কার্যকরী ব্যাবহারের মাধ্যমে। শুধু ভ্যাকসিন প্রয়োগের দিকে মনোনিবেশ না করে ওপরে উল্লিখিত পদ্ধতিগুলোর যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা সম্ভব এবং সম্ভবত সেটাই সবচেয়ে কার্যকরী এবং বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবস্থা।

সূত্রঃ দ্য ডেইলি স্টার

The post করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের করণীয় appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
দুর্গাপূজার সামাজিক ও অর্থনৈতিক তাৎপর্য https://www.ulipur.com/?p=11805 Sun, 25 Oct 2020 01:15:40 +0000 https://www.ulipur.com/?p=11805 || ড. কানাই লাল রায় || বৈদিক যুগের শারদোৎসব বা রুদ্রযজ্ঞ, সিন্ধু উপত্যকায় আবিস্কৃত প্রাগৈতিহাসিক যুগের বহু পোড়ামাটির স্ত্রী মূর্তি প্রভৃতি দুর্গাপূজার প্রাচীনত্বের পরিচায়ক। ছান্দোগ্য উপনিষদ, ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, মার্কণ্ডেয়পুরাণ, কালিকাপুরাণ, দেবীভাগবত, কালিবিলাসতন্ত্র প্রভৃতি পুরাণতন্ত্র গ্রন্থে কোথাও কোথাও কিছুটা রূপকাশ্রিত হলেও প্রায় ধারাবাহিকভাবে দুর্গাপূজার কথা জানা যায়। বাঙালি হিন্দুর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বৃহৎ জাতীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আদিতে [...]

The post দুর্গাপূজার সামাজিক ও অর্থনৈতিক তাৎপর্য appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
|| ড. কানাই লাল রায় ||
বৈদিক যুগের শারদোৎসব বা রুদ্রযজ্ঞ, সিন্ধু উপত্যকায় আবিস্কৃত প্রাগৈতিহাসিক যুগের বহু পোড়ামাটির স্ত্রী মূর্তি প্রভৃতি দুর্গাপূজার প্রাচীনত্বের পরিচায়ক। ছান্দোগ্য উপনিষদ, ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, মার্কণ্ডেয়পুরাণ, কালিকাপুরাণ, দেবীভাগবত, কালিবিলাসতন্ত্র প্রভৃতি পুরাণতন্ত্র গ্রন্থে কোথাও কোথাও কিছুটা রূপকাশ্রিত হলেও প্রায় ধারাবাহিকভাবে দুর্গাপূজার কথা জানা যায়।

বাঙালি হিন্দুর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বৃহৎ জাতীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আদিতে চৈত্র মাস তথা বসন্তকালে দুর্গাপূজা হতো, যা ‘বাসন্তীপূজা’ নামে খ্যাত। তবে শরৎকালে অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গাপূজাই অধিক জনপ্রিয়।

মার্কণ্ডেয়পুরাণ অনুযায়ী প্রকৃতপক্ষে রাজা সুরথই প্রথম বাংলাদেশে দুর্গাপূজা করেছিলেন। গবেষকদের মতে, সুরথের রাজধানী বলিপুর হলো বর্তমান বোলপুর। তবে বাংলায় সর্বপ্রথম সাড়ম্বরে দুর্গাপূজার প্রচলন করেন সম্রাট আকবরের আমলে বাংলার বারভূঁইয়ার অন্যতম রাজশাহী জেলার তাহিরপুরের রাজা কংসনারায়ণ। কথিত আছে, রাজা কংসনারায়ণ কুলপুরোহিত পণ্ডিত রমেশ শাস্ত্রীর কাছে অশ্বমেধ যজ্ঞ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। কিন্তু রমেশ শাস্ত্রী তাকে বলেছিলেন, কলিযুগে অশ্বমেধ যজ্ঞ প্রশস্ত নয়, বরং তিনি সাড়ম্বরে দুর্গাপূজা করুন। দুর্গাপূজায় অশ্বমেধ যজ্ঞেরই ফললাভ হবে। তার পরামর্শ অনুযায়ী রাজা কংসনারায়ণ এই শারদীয় দুর্গোৎসবে তখনকার দিনে সাড়ে আট লাখ টাকা ব্যয় করেছিলেন। তার দেখাদেখি ভাদুড়িয়ার জমিদার জগৎনারায়ণ ওই বছরই বসন্তকালে বাসন্তী দুর্গোৎসব করেছিলেন ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে। কিন্তু তার পূজা কংসনারায়ণের অনুরূপ জনপ্রিয়তা পায়নি।

তাহিরপুরের কংসনারায়ণের রাজবাড়ি রাজশাহী থেকে ৪০ কিলোমিটারের মতো দূরে। বাসে যাওয়া যায়। রাজবাড়ি ও দুর্গামন্দির স্বাভাবিক কারণেই পূর্বাবস্থায় নেই। বর্তমানে রাজবাড়িকে কিছুটা সংস্কার করে কলেজ করা হয়েছে। দুর্গামন্দিরটিও অনেক সংস্কার করা হয়েছে। তবে দুর্গাপূজার ধারাবাহিকতাটি চলে আসছে। আগে মাটির দুর্গাপ্রতিমায় পূজা করা হতো। ২০১৮ সাল থেকে সেখানে অষ্টধাতুর দুর্গাপ্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। এই সুদৃশ্য দুর্গাপ্রতিমা দর্শনের জন্য প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বহু দর্শকের সমাগম হয়। বর্তমানে এখানে নিত্যপূজার ব্যবস্থা হয়েছে এবং একজন স্থায়ী পুরোহিত নিযুক্ত আছেন।

এ প্রসঙ্গে আরও বলা যায়, বাংলায় দেবী দুর্গার যে মূর্তিটি সচরাচর দেখা যায়, সেটি পরিবারসমন্বিতা বা সপরিবার দুর্গার মূর্তি। এই মূর্তির মধ্যস্থলে দেবী দুর্গা সিংহবাহিনী ও মহিষাসুরমর্দিনী; তার ডান পাশে ওপরে দেবী লক্ষ্মী ও নিচে গণেশ, বাঁ পাশে ওপরে সরস্বতী ও নিচে কার্তিকেয়। কলকাতায় সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার ১৬১০ সালে এই সপরিবার দুর্গার প্রচলন করেন। তারা কার্তিকেয়র রূপ দেন জমিদারপুত্রের, ইতোপূর্বে যা ছিল সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের আদলে যুদ্ধের দেবতারূপে কল্পিত। কলকাতায় কোনো কোনো বাড়িতে দুর্গোৎসবে লক্ষ্মী ও গণেশকে সরস্বতী ও কার্তিকেয়র সঙ্গে স্থান বিনিময় করতে দেখা যায়। এগুলো ছাড়াও বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে দেবী দুর্গার বিভিন্ন রকমের স্বতন্ত্র মূর্তি চোখে পড়ে। তবে দুর্গার রূপকল্পনা বা কাঠামোবিন্যাসে যতই বৈচিত্র্য থাকুক, বাংলায় দুর্গোৎসবে প্রায় সর্বত্রই দুর্গা সপরিবারে পূজিত হন।

দুর্গাপূজার সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিকটি কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। জীবনে অশুভ অসুর শক্তির বিনাশ করে শুভ সুর শক্তির প্রতিষ্ঠা দুর্গাপূজার শাশ্বত দর্শন। দুর্গাপূজা জাতীয় মহা আলোড়ন সৃষ্টিকারী ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এতে জড়িত হয় সর্বস্তরের মানুষ। ব্রাহ্মণ, প্রতিমা প্রণেতা, মালী, কুম্ভকার, তন্তুবায়, নরসুন্দর, বাদ্যকর, ঋষিদাস প্রভৃতি সর্ববর্ণের সর্বস্তরের মানুষের সহায়তা ও মিলন প্রয়োজন হয় দুর্গাপূজায়। বহু বিস্তৃত উদার ব্যাপক অনুভূতি জাগে এই পূজায়। বাস্তবিকই ধনী-দরিদ্র, উঁচু-নীচ, ব্রাহ্মণ-শূদ্র এমনকি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের মহামিলনের ক্ষেত্র এই দুর্গাপূজা। এর ফলে সামাজিক বন্ধন যেমন দৃঢ় হয়, মানুষ অর্থনৈতিক দিক দিয়েও নানাভাবে উপকৃত হয় এই দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে।

দশভুজা দুর্গার কাঠামোতে দেশ ও জাতির সংহতি সাধনের স্পষ্ট ইঙ্গিত আছে। দুর্গা প্রতিমায় লক্ষ্মী ধনের, সরস্বতী জ্ঞানের, কার্তিক বীরত্বের, গণেশ সাফল্যের প্রতীক, আর দুর্গার দশটি হাত আর দশটি প্রহরণ (অস্ত্র) অপরিমেয় বলবীর্যের প্রতীক। সিংহ বশ্যতার প্রতীক আর মহিষাসুর সমস্ত অশুভের প্রতীক। একটি বলিষ্ঠ জাতি সমস্ত অশুভকে দলিত করে পরিপূর্ণতা লাভ করে। দেবী দুর্গার আরাধনাকে কেন্দ্র করে আমাদের মনেও এই ধারণাই দৃঢ় হয়। আমাদের দেশে দুর্গাপূজার উৎসবে অংশগ্রহণ করেন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ। রাজনৈতিক ও গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ পূজামণ্ডপ দর্শন ও শুভেচ্ছাজ্ঞাপন করেন। বুদ্ধিজীবীরা ভাষণ দেন; শিল্পীরা সংগীত, নাটক প্রভৃতি পরিবেশন করেন। দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেতার-টেলিভিশনে প্রচার হয় নানা অনুষ্ঠান, পত্রপত্রিকার বিশেষ সংখ্যা বা ক্রোড়পত্র। দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রকাশিত হয় বিশেষ স্মরণিকা। এর দ্বারা শিল্প-সাহিত্যের চর্চা হয়, সংস্কৃতি বিকশিত হয়। দুর্গাপূজার প্রতিমা নির্মাণ, পূজামণ্ডপ ও তোরণ নির্মাণ, আলোকসজ্জা, আলপনা প্রভৃতির মধ্য দিয়ে ভাস্কর্য ও চিত্রশিল্পের বিকাশ ঘটে। বলা বাহুল্য, এর সঙ্গে বিশাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি তো যুক্ত আছেই।

দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, সামাজিক মিলন উৎসবও বটে। এ পূজার সময় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সম্প্রীতির সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জনকল্যাণের জন্যই দুর্গাপূজা। জাতির ঐহিক ও পারত্রিক তথা সামগ্রিক কল্যাণই দুর্গাপূজার মূল লক্ষ্য।

লেখকঃ ড. কানাই লাল রায়, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, সংস্কৃত বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

The post দুর্গাপূজার সামাজিক ও অর্থনৈতিক তাৎপর্য appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
করোনা পরবর্তীকালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে https://www.ulipur.com/?p=10930 Sat, 27 Jun 2020 08:41:47 +0000 https://www.ulipur.com/?p=10930 || মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান || করোনা মহামারী সময়ে আমাদের জীবন ধারা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। আগে আমরা যারা অফিসে গিয়ে কাজ করতাম এখন সে কাজ বাসা থেকে রিমোটলি করছি। আগে আমরা চিকিত্সা সেবা নিতে ডাক্তারের কাছে যেতাম, এখন সে সেবা নিচ্ছি টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে। মোবাইলের মাধ্যমে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিচ্ছি। আমরা কোনো পণ্য কিনলে দোকানে গিয়ে তা কিনতাম, [...]

The post করোনা পরবর্তীকালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
|| মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান ||
করোনা মহামারী সময়ে আমাদের জীবন ধারা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। আগে আমরা যারা অফিসে গিয়ে কাজ করতাম এখন সে কাজ বাসা থেকে রিমোটলি করছি। আগে আমরা চিকিত্সা সেবা নিতে ডাক্তারের কাছে যেতাম, এখন সে সেবা নিচ্ছি টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে। মোবাইলের মাধ্যমে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিচ্ছি। আমরা কোনো পণ্য কিনলে দোকানে গিয়ে তা কিনতাম, আর এখন তা কিনছি ই-কমার্সের মাধ্যমে। করোনা মহামারীতে সব কিছু আইটি নির্ভর হয়ে গেছে। বিশেষ করে ব্যবসাগুলো আইটিতে ট্রান্সফার হচ্ছে। এতে করে আর একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে আর তা হলো, প্রচুর লোক চাকরি হারাচ্ছে, অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে যেসব কোম্পানি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে তারা প্রচুর লোকবল নিয়োগ দিচ্ছে। যেমন- জুম, আমাজন, ইনস্টাকার্ড, নেটফ্লিক্সসহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান। আমরা যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাবো, তথ্যপ্রযুক্তিতে অনেক বড় সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।

প্রশ্নঃ তথ্যপ্রযুক্তি খাত কোন দিকে অগ্রসর হচ্ছে?

উত্তরঃ সম্ভাবনার যে দরজাগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো তথ্যপ্রযুক্তি খাত। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা ডাটা সেন্টারে যেতে পারছি না। সেখানে যেতে হলে আমাকে করোনা মোবাবিলার সরঞ্জাম পরিধান করতে হবে, শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রেখে যেতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ অবস্থায় আমাদের ক্লাউড বেজড টেকনোলজিতে যেতে হবে। আমাদের যারা তরুণ জনবল আছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তাদের প্রথম কাজ হচ্ছে, ক্লাউড বেজড টেকনোলজি সম্পর্কে জানতে হবে। এরা চাইলে আমাজন, গুগল ও মাইক্রোসফটের কাজ থেকে এ অভিজ্ঞতা পেতে পারে। কারণ, এই তিনটি প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে মার্কেট লিডার হিসেবে কাজ করছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক সার্টিফিকেশন আছে, ট্রেনিং আছে। এগুলো অনলাইনে ও ইউটিউবের মাধ্যমে গ্রহণ করা যায়। এ কোর্সগুলো তরুণরা ফ্রি গ্রহণ করতে পারবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ ডলার দিয়ে কোর্স করতে হতে পারে। এই কোর্সগুলোর সুবিধা হলো— বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে গ্রহণ করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, ধরুন বাংলাদেশে বসে এ কোর্সগুলো কেউ সম্পন্ন করলে বিশ্বের যেকোনো দেশে তা কাজে লাগাতে পারবে।

প্রশ্নঃ এ অবস্থায় তরুনদের কী করণীয় ?

উত্তরঃ এ অবস্থায় তরুণদের তিনটি ক্ষেত্রে তাদের মেধা কাজে লাগাতে হবে: প্রথমত, ক্লাউড সংক্রান্ত টেকনোলজি শিখতে হবে (এটা একদম বেসিক); দ্বিতীয়ত, শিখতে হবে কীভাবে নতুন ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করা যায়; তৃতীয়ত, নতুন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। লজেস্টিক পরিবর্তনের পরিকল্পনা অনেকেই করছে। উবারের মতো প্রযুক্তি কীভাবে বাস-ট্রাক বা ট্রানপোর্টে ব্যবহার করা যায়? হেলথ কেয়ারে ব্যবহূত প্রযুক্তিগুলো যেভাবে কাজ করছে এগুলোকে কীভাবে আইটিতে স্থানান্তর করা যায়? আমাদের বুঝতে হবে, কীভাবে এ প্রসেসগুলো কাজ করে। এগুলো শিখতে সয়তা হবে ডিজাইন থিংকিং থেকে। ডিজাইন থিংকিং একটি পরিচিত ও ভালো ম্যাথোড। এমআইটি, স্ট্যামফোর্ট, এসএপিএসহ বড় বড় ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে শিখতে পারা যাবে। এছাড়া ইউটিউবে তো ফ্রি রয়েছেই। মূল কথা হলো- কাজটা আমাদের ভালোভাবে বুঝতে হবে।

প্রশ্নঃ কোন ধরনের টেকনোলজি শিখলে আমাদের বেশি কাজে লাগবে?

উত্তরঃ আমাদের প্রথমে ক্লাউডের বেসিক সার্টিফিকেশনগুলো শিখতে হবে। তারপর কী জিনিস দিয়ে আমরা এটিকে তৈরি করবো তা জানতে হবে। সার্ভারলেস টেকনোলজি সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে।

সার্ভারলেস প্রযুক্তির বিশেষ সুবিধা হলো- এটি শুরু করতে তেমন কোনো খরচ নেই। সার্ভার টেকনোলজিতে আপনি যদি একজন গ্রাহকের জন্য সার্ভিস চালু করতে চান তাহলে সার্ভারের জন্য এপ্লিকেশন বানাতে হবে এবং সার্ভার রান করার জন্য খরচ করতে হবে। সার্ভারলেস টেকনোলজিতে এমন কোনো খরচ নেই। আমাজন, গুগল বা মাইক্রোসফটে প্রথম ১২ মাস আপনাকে কোনো খরচ গুণতে হবে না। অধিক স্টোরেজের জন্য হয়তো আপনাকে কিছু প্রদাণ করতে হতে পারে। আর একটি প্লাস পয়েন্ট হলো— এ প্রযুক্তি ব্যবহার করলে আমাদের অনেক সময় বেঁচে যাবে। সার্ভার টেকনোলজিতে আপনাকে এপ্লিকেশনের সাইজ, স্টোরেজ ক্যাপাসিটি, সার্ভার নিয়ে চিন্তা করতে হবে যা সার্ভারলেস টেকনোলজিতে প্রয়োজন নেই। সার্ভার টেকনোলজির চেয়ে সার্ভারলেস টেকনোলজিতে ১০ ভাগের ১ ভাগ টাকা খরচ হবে। এজন্য ই-কমার্স বা অন্য কোনো ছোট বিজনেসকে সার্ভারলেস টেকনোলজিতে রুপান্তর করতে হবে। বর্তমান সময়ে তরুণদের জন্য এটি একটি অনেক বড় সুযোগ। এ মার্কেট ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। এখান থেকে যদি কিছু অংশ বাংলাদেশের তরুণজের জন্য আনা সম্ভব হয় তাও আমাদের অনেক বড় সুযোগ হবে।

করোনা পরিস্থিতি বা এর পরবর্তী সময়ে অবশ্যই সবাইকে ক্লাউডে প্রবেশ করতে হবে। খরচ কম হওয়াতে আগামীতে সবাই এ প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে আসবে। ডাটা প্রাইভেসি, ডাটা সিকিউরিটি, অবকাঠামো কন্ট্রোল নিয়ে মানুষের মনে ভয় ছিল অহেতুক। আমাদের দেশের তরুণদের সার্ভারলেস টেকনোলজিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

লেখকঃ সলুশন্‌স আর্কিটেক্ট, আমাজন; প্রতিষ্ঠাতা, ক্লাউড ক্যাম্প, বাংলাদেশ।

শ্রুতিলিখনঃ মাহবুব শরীফ

সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক

The post করোনা পরবর্তীকালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
সমাজের গভীর বৈষম্য স্পষ্ট করেছে মহামারি করোনাভাইরাস https://www.ulipur.com/?p=10726 Fri, 12 Jun 2020 07:52:21 +0000 https://www.ulipur.com/?p=10726 || সুজানাহ সাভাজ || বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় হেলিকপ্টার থেকে নামার পরই বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে স্বাগত জানায় স্বাস্থ্যকর্মীদের ছোট একটি দল। বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান সিলেটের সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ঢাকায় অবতরণের পরই দ্রুত তাকে দেশের প্রিমিয়ার স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা থাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএইমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তের মধ্যে [...]

The post সমাজের গভীর বৈষম্য স্পষ্ট করেছে মহামারি করোনাভাইরাস appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
|| সুজানাহ সাভাজ ||
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় হেলিকপ্টার থেকে নামার পরই বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে স্বাগত জানায় স্বাস্থ্যকর্মীদের ছোট একটি দল। বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান সিলেটের সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ঢাকায় অবতরণের পরই দ্রুত তাকে দেশের প্রিমিয়ার স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা থাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএইমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়।

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজনই এই ধরনের চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার আশা করতে পারেন। আর মাত্র কয়েক মাইল দূরেই সবচেয়ে কম সৌভাগ্যবানদের চিকিৎসার জন্য গরমের মধ্যে ফুটপাতে বসে থাকতে দেখা যায়।

মহামারির আঘাত ১৭ কোটি জনসংখ্যার ঘনবসতিপূর্ণ দেশটির ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ফাটলগুলো যেন স্পষ্ট করে দিয়েছে। লকডাউন ও অপর্যাপ্ত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কারণে কয়েক লাখ মানুষকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

গত সপ্তাহেই নাগরিকদের আবারও কাজে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

তবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও দিনদিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এবং অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারেনি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসছে দাতব্য সংস্থা ও সচেতন নাগরিকরা।

বাংলাদেশ জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাইরে অবস্থানের সময় মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হটস্পটগুলোতে স্থানীয়ভাবে লকডাউন চালুর পরিকল্পনার ঘোষণাও দিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৫২। মারা গেছেন ১ হাজার ৪৯ জন।

এই মাসের শেষ দিকে সংখ্যাটি ১ লাখ ২৩ হাজারে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য পরিষেবা অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

দেশটিতে করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষাও কম। বাংলাদেশি জনস্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা এমিনেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. শামীম তালুকদার জানান, প্রতিদিন মাত্র ১০ হাজার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়। এর বাইরে কোভিড-১৯ পরীক্ষা জন্য অনুমোদিত হাসপাতালের বাইরে আরও কয়েক হাজার মানুষের লাইন রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ঢাকায় প্রতি পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করলে গড়ে এক জনের কোভিড পজিটিভ পাওয়া যায়।’

‘ঢাকার বাইরে কোভিড-১৯ পরীক্ষার মান এখনো প্রশ্নবিদ্ধ।’ ডা. তালুকদার বলেন, ‘আমাদের সঠিক প্রশিক্ষণ নেই। প্রচুর ফলস নেগেটিভ আসছে।’

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সঠিকভাবে পরীক্ষা করতে পারলে সরকারি তালিকায় মৃতের সংখ্যাও বাড়বে।

দেশটিতে করোনায় মৃতের প্রকৃত তথ্য জানা বেশ কঠিন।

ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানের তত্ত্বাবধায়ক জানান, স্বাভাবিক সময়ের চাইতে গত দুই মাসে প্রায় দ্বিগুণ কবর খনন করা হয়েছে।

কবর দেওয়ার সময় প্রায় ৫০ জনের মৃতদেহের মধ্যে কয়েকজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

আগে বনানী কবরস্থানে দিনে একটি বা দুইটি মরদেহ কবর দেওয়া হলেও গত মাস থেকে প্রতিদিন এখানে গড়ে পাঁচটির মতো কবর দেওয়া হয়।

কোভিড-১৯ আক্রান্তদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে ঢাকার রায়েরবাজার কবরস্থান। সেখানকার তত্ত্বাবধায়ক জানান, মে মাসের শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন কোভিড রোগীকে সেখানে কবর দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, কোভিডে মারা যাননি এমন মৃতদেহের সংখ্যা আগের তুলনায় এখন দিনে গড়ে প্রায় ১০টি বেড়েছে।

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপরেও ধাক্কা আসতে শুরু করেছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন জানান, স্বাস্থ্যসেবা খাতে দেশটিতে রাষ্ট্রীয় ব্যয় জিডিপির এক শতাংশেরও কম।

তিনি বলেন, ‘এখানে একটা ফাঁকা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। চকচকে হাসপাতাল কখনো কখনো সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ডের ভবনের মতো দেখালেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভেতরে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, নেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী।’

কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অকার্যকর অবস্থা করুণভাবে প্রকাশ পেয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ চিকিৎসক ফাউন্ডেশনের (বিডিএফ) চেয়ারম্যান ডা. শাহেদ রাফি পাভেল।

তিনি জানান, দেশে মাত্র কয়েক হাজার ভেন্টিলেটর রয়েছে। আইসিইউ বেডের ঘাটতি আছে। সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ঢাকার ২১৮ টি নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের মধ্যে কেবল ৬৯ টি চালু রয়েছে।

এদিকে, অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশিরা ঘরেই সিলিন্ডার মজুত করতে শুরু করেছেন যাতে ঘরেই চিকিৎসা নেওয়া যায়। সংকটে পড়তে না হয়।

ডা. তালুকদার বলেন, ‘অনেক হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের দায়িত্বে রেখে সিনিয়র চিকিৎসকরা চলে যান। তারা কাজ করতে আসতে খুব ভয় পান।’

‘তারা (জুনিয়র চিকিৎসকগণ) জানেন না তারা কী করছেন। কোন ধরনের প্রোটোকল বা চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। কোন ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। এ সম্পর্কে খুব কম নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

গত ৮ মার্চ দেশটিতে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই হাসপাতালগুলোকে কোভিড ও নন-কোভিড দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

ডা. পাভেল জানান, ‘কোভিড হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে অনেকেই উপসর্গের কথা লুকিয়ে নন-কোভিড হাসপাতালগুলোতে সাহায্যের জন্য আসেন। নন-কোভিড হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ছিল না। ফলে সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হন। পরবর্তীতে চিকিৎসক ও নার্সরা কাজ করতে অনিচ্ছা জানান।’

স্বাস্থ্যসেবা জরুরি অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ এখন গভীর মানবিক সংকটেরও মুখোমুখি। ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘কোভিড -১৯ এর সংক্রমণ যখন আকাশছোঁয়া তখন দেশকে উন্মুক্ত করে দেওয়া, “স্পষ্টতই অর্থনীতির পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সরকারের একটি মরিয়া প্রচেষ্টা”।’

দেশটির রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী লকডাউনের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়, যার অধিকাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে তা এপ্রিল মাসে গত বছরের তুলনায় ৮৩ শতাংশ কমে গেছে।

বাংলাদেশের ‘লকডাউন’ এর ফলে কয়েক লাখ মানুষ জীবিকা হারিয়ে পরিবারসহ ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছে।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের জরিপ বলছে, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে শহর ও গ্রামীণ অঞ্চলে দিনে তিন বার খাবার খেতে সক্ষম পরিবারের সংখ্যা যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ১৪ শতাংশ কমেছে।

প্রথমেই কাকে সাহায্য করা প্রয়োজন তা শনাক্ত করা এখনো একটি সমস্যা হিসেবেই থেকে গেছে। ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ‘সরকারের সেফটি নেট প্রোগ্রামগুলো বেশিরভাগই গ্রামীণ দরিদ্রদের লক্ষ্য করে। শহরগুলোর ক্ষেত্রে, যেখানে লকডাউনের প্রভাব আরও তীব্র সেখানকার পরিস্থিতি এখনো অস্পষ্ট।’

সালেহ বলেন, ‘আমাদেরকে বাস্তববাদী হতে হবে। আমাদের মতো দেশে প্রতিদিন কয়েক হাজার পরীক্ষা এবং বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে সংস্পর্শে আসাদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে না।’

তার মতে, পরীক্ষার বাইরেও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাসিন্দাদের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো।

ব্র্যাকের মতো স্বাস্থ্যসেবা এবং মানবিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্যান্য অনেক এনজিও।

এ ধরনের কয়েকটি প্রকল্পের একটি হলো ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’। এই দাতব্য সংস্থাটির বিশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তরুণ স্বেচ্ছাসেবক এবং গ্রাম উন্নয়ন দলগুলো হাত ধোওয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি করোনার উপসর্গ শনাক্ত ও কীভাবে আইসোলেশনে থাকতে হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ দিচ্ছে।

এছাড়াও সচেতন নাগরিকরা নিজস্ব তহবিল গঠন করে সহায়তা কর্মসূচি চালাচ্ছেন।

স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর সহায়তায় চট্টগ্রামের সমাজসেবী আজিজুল হাকিম রমজান মাসে প্রতিদিন ৬০০ জনের জন্য রান্না করা খাবার সরবরাহ করেছেন।

স্থানীয় একজন সমাজসেবী হিসেবে তিনি ও তার পরিবার বেশ কয়েক বছর ধরেই রমজান মাসে এটি করেন। তবে এ বছর, মহামারিতে কষ্টে থাকা মানুষের জন্য তিনি যতটা সম্ভব খাবারের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘মধ্যম আয়ের পরিবার যারা সাধারণত প্রতিদিনের খাবার ব্যবস্থা করতে পারতো তারাও খাবারের জন্য লড়াই করে চলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবাইকে নিজেদের জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা ভিএসও’র এক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী দিনাজপুরের মোফাজ্জল হোসেন। এলাকার মানুষের মাঝে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘গ্রামের মানুষ জানেন না কী চলছে। তারা করোনার কথা শুনেছে, তবে কীভাবে এটি ছড়িয়ে পড়েছে বা কীভাবে এটি বন্ধ করা যায় এটা তারা জানে না।’

তিনি বলেন, ‘এখানে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই ভাবেন, করোনা কেবল শহরের ধনী লোকদের হবে। অনেকেই বলেন, এটা সৃষ্টিকর্তা মানুষের শাস্তি দিতে পাঠিয়েছেন। গ্রামের ইমামরাও অনেক সময় এই ধরনের কথা বলেন।’

সরকারি ছুটি প্রত্যাহারের পর স্থানীয় বাজারগুলোতে জনসমাগম দেখেন তিনি।

বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে এখন বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে সচেতনতার কথা বললে সবাই এখন বলছে, “করোনা পরিস্থিতি ভালো হয়ে গেছে। এই কারণেই সরকার লকডাউন প্রত্যাহার করেছে”।’

বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান বলেন, ‘আচরণগত পরিবর্তনের জন্য সময় লাগে। সরকার হয়তো বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহারের জন্য আইন করতে পারে। কিন্তু, মানুষ যদি সচেতন না হয়, না জানে তাহলে মাস্ক তাদের নাকের নিচেই (অনেকেই যেভাবে পরেন) রেখে দেবেন। তাহলে এটা কি ভালো ব্যবস্থা হবে? ভবিষ্যতের কী হতে যাচ্ছে এটা ভেবে আমি আতঙ্কিত।’

(দ্য টেলিগ্রাফে ১১ জুন, ২০২০ এ প্রকাশিত)

সূত্রঃ দ্য ডেইলি স্টার

The post সমাজের গভীর বৈষম্য স্পষ্ট করেছে মহামারি করোনাভাইরাস appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
পুলিশের এমন মানবিক আচরণই চায় জনগণ https://www.ulipur.com/?p=10556 Thu, 21 May 2020 17:33:50 +0000 https://www.ulipur.com/?p=10556 || জাহাঙ্গীর আলম সরদার || সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রামে করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় শুরু থেকেই জেলার পুলিশ বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেন। কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খাঁন এর নির্দেশে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ করছেন। বিদেশ ফেরত মানুষজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ [...]

The post পুলিশের এমন মানবিক আচরণই চায় জনগণ appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
|| জাহাঙ্গীর আলম সরদার ||
সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রামে করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় শুরু থেকেই জেলার পুলিশ বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেন। কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খাঁন এর নির্দেশে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ করছেন। বিদেশ ফেরত মানুষজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিটি পুলিশ সদস্য। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউন করা হলে সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। ফলে অনেকেই খাদ্য সংকটে পড়ে। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষ থেকে বৃদ্ধ বয়সের মানুষেরা অভাবনীয় খাদ্যকষ্টে দিন কাটাতে থাকেন। এ পরিস্থিতিতে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খাঁন ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে পুলিশ বিভাগের সদস্যদের মাধ্যমে এসব খাদ্য সংকটে থাকা মানুষের বাড়ি বাড়ি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। হরিজান সম্প্রদায়ের কর্মহীন পরিবারসহ খাদ্য সংকটে থাকা বিভিন্ন পেশার মানুষকে এ খাদ্য সহায়তা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় শিক্ষার উন্নয়নসহ মানবিক কাজ করে প্রশংসিত হয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে করোনা আক্রান্ত হয়েও মানুষকে সাহস যোগাচ্ছেন। আশার কথা, প্রথম ধাপের পরবর্তী পরীক্ষায় তাঁর নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। আমরা কুড়িগ্রামবাসী তার দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করছি। কুড়িগ্রামের উলিপুর অঞ্চলের সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের জন্য প্রশংসিত হয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা র‌্যাব-২ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত। করোনাভাইরাসের শুরু থেকে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতসহ খাদ্য সংকটে থাকা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। যা ওনার ফেসবুকে পেজে দেখে অনেকেই প্রশংসা করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান উলিপুর অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করার সময় এ অঞ্চলের প্রতিবন্ধি শিশুদের নিয়ে কাজ করে সাধুবাদ পেয়েছিলেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমনের শুরু থেকে ওনার ফেসবুক পেজে মানবিক সহায়তার পোষ্ট গুলো অনেকের মতো আমাকেও দারুনভাবে নাড়া দিয়েছে। বিষয়গুলো ব্যক্তিগত প্রশংসার জন্য বলছি, তা নয়। করোনাভাইরাসের কারনে সারাদেশে আমরা এক মানবিক পুলিশকে দেখতে পারছি। যা আমরা দীর্ঘদিন ধরে আশা করে আসছি। পুলিশ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই নেতিবাচক ধারনা আছে। সে নেতিবাচক ধারনা যে শেষ হয়ে গেল, তা কিন্তু বলছি না। আজকের এ করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব ঠেকানো যুদ্ধের বাস্তব প্রেক্ষাপটে পুলিশ সত্যিই মানবিক আচরণ করছেন। সেটার জন্য অবশ্যই আমরা সাধুবাদ জানাতে পারি।

করোনাভাইরাস সংক্রমনের শুরু থেকে বিদেশ ফেরতদের অবস্থান সনাক্ত করে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর সদস্যবৃন্দ করোনা লড়াই শুরু করেন। এরপর করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে পাঠানো থেকে লকডাউন নিশ্চিত করতে পুলিশ সদস্যবৃন্দ দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। জনগনের সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণসহ মানবিক সাহায্য করছেন পুলিশ সদস্যরা। করোনা আক্রান্ত কোন ব্যক্তি যখন মৃত্যুবরণ করেন, তখন তাদের নিকটাত্মীয়রাও দাফন কার্যে এগিয়ে আসেন না। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যরা মৃত ব্যক্তির দাফনের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন।

সম্প্রতি বোরো ধান পাকা শুরু হলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শ্রমিক সংকট দেখা দিলে মাননীয় প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানান। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ কৃষি বিভাগ উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষি শ্রমিক সংগ্রহ করে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ যাতায়াতের যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেন। এক্ষেত্রেও পুলিশ বিভাগ দায়িত্বশীল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে পুলিশ সদস্যদের সরাসরি সাধারণ জনগনসহ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসতে হচ্ছে। এ কারনে অনেক পুলিশ সদস্য ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করা বিশেষ করে পুলিশের কনস্টেবল পদমর্যদার সদস্যরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খাঁন এর খাদ্য সহায়তাসহ বিভিন্ন মানবিক কর্মকান্ডের বিষয়ে উলিপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা দিনরাত করোনা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছি। খাদ্যকষ্টে থাকা অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি। করোনা বিষয়ে পুলিশের কোন ট্রেনিং নেই, তবুও মানুষের স্বাভাবিক জীবন রক্ষায় সামজিক দুরত্ব রক্ষা করতে পুলিশ সবসময়েই মাঠে আছেন। দিনরাত জীবনের ঝুকি নিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে ঘোষনা করা হয় “মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার”। করোনাভাইরাসের কারনে কর্মসূচি শিথিল করা হলেও পুলিশ মানবিক আচরণ দিয়ে জনতার হয়ে উঠেছেন। আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে নতুন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ ঘোষনা করেছেন পুলিশ বাহিনীকে জনতার বন্ধুতে পরিনত করবেন। বাস্তবতার নিরিখে পুলিশের ভুমিকা অনেকটা সে দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। আর এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে পুলিশ বাহিনী এদেশের মানুষের সত্যিকার বন্ধুতে পরিনত হবেন। তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন আসবে। সাধারণ মানুষ তাদের কাঙ্খিত সেবা পাবে। পুলিশ বাহিনীর উপর দীর্ঘদিনের নেতিবাচক ধারনা পাল্টিয়ে ইতিবাচক ধারনার সৃষ্টি হবে। আসুন সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করি। সুস্থ থাকি।

লেখকঃ জাহাঙ্গীর আলম সরদার, সাংবাদিক ও সহকারী অধ্যাপক, উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজ, উলিপুর, কুড়িগ্রাম।

(বিঃদ্রঃ প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।)

The post পুলিশের এমন মানবিক আচরণই চায় জনগণ appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
ত্রাণ বিতরণে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বড় চ্যালেঞ্জ https://www.ulipur.com/?p=10426 Tue, 05 May 2020 08:33:52 +0000 https://www.ulipur.com/?p=10426 || জাহাঙ্গীর আলম সরদার || বাংলাদেশে যেকোন দূর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ বিতরণ নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম থেকে চুরির ঘটনাও সবার জানা। এসময় কি তথাকথিত ত্রান চোরেরা বেশি সরব থাকেন, নাকি মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক নজরদারী একটু বেশি থাকে বলে চুরির ঘটনা সবার সামনে আসে, সেই কৌতূহল থেকেই যায়। সরকার বছরের বেশির ভাগ সময় কোন [...]

The post ত্রাণ বিতরণে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বড় চ্যালেঞ্জ appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>
|| জাহাঙ্গীর আলম সরদার ||
বাংলাদেশে যেকোন দূর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ বিতরণ নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম থেকে চুরির ঘটনাও সবার জানা। এসময় কি তথাকথিত ত্রান চোরেরা বেশি সরব থাকেন, নাকি মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক নজরদারী একটু বেশি থাকে বলে চুরির ঘটনা সবার সামনে আসে, সেই কৌতূহল থেকেই যায়। সরকার বছরের বেশির ভাগ সময় কোন না কোনভাবে হতদরিদ্র মানুষের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে। তাহলে সে সময়গুলোতে ত্রাণ কিংবা অন্য কোন সহযোগিতা তছরুপের ঘটনা জন-মানুষের নজরে আসে না কেন? নাকি মিডিয়াও বিষয়গুলো ফলাও করে প্রচার করেন না। নাকি বাংলাদেশে সরকারী সাহায্য সহযোগিতা দূর্যোগকালীন সময়ে বেশি আসে বলে এমন প্রবণতার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন ত্রান বিতরণে সরকারের মন্ত্রী, এমপি থেকে রাজনৈতিক নেতারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। কিন্তু শুরু থেকেই ত্রাণ চুরির ঘটনা সামনে চলে আসলে সরকার বিব্রত হন। এ পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ত্রান বিতরণে অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার প্রতিটি জেলায় একজন করে সচিবকে ত্রান বিতরণ তদারকির দায়িত্ব প্রদান করেছেন। এখন দেখার বিষয় সচিব মহোদয়গণ কতটা নিয়ন্ত্রন করতে পারেন ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের বিষয়টি। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে অবশ্যই দুস্থ্যদের তালিকা তৈরি থেকে বিতরণ পর্যন্ত প্রশাসনিক নজরদারী বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি ত্রাণ চুরির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে হয়তো কিছুটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। আর তা না হলে সময়েই বলে দিবে সচিব মহোদয়গণ কতটা সফল হবেন। এ পরিস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মহোদয়গণের কাছেও ত্রাণ বিতরণে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ চুরি ঠেকানো কিছুটা চ্যালেঞ্জও বটে।

দেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। সেই শুরু হয়ে গত ৩ মে পর্যন্ত এই মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয় মোট ১৭৭ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৪শত ৫৫ জন। ক্রমেই মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে লাগামহীনভাবে। মানুষকে সচেতন করতে সরকার বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের প্রতিটি স্তরের কর্মকর্তা থেকে কর্মচারীরা নিরন্তর ছুটে চলছেন শহর থেকে গ্রামে। কিন্তু আমরা কতটা সচেতন হতে পারছি!

পবিত্র রমজান মাস। সিয়াম সাধনার এ মাসে আমরা কতটা নিরাপদ থাকতে পারবো, সেটাও দেখার বিষয়। তাছাড়া দেশে বর্তমানে অধিকাংশ মানুষেই কর্মহীন। এ কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ দীর্ঘসময়ে কর্মহীন নিম্নআয়ের মানুষ খাদ্যসংকটে পড়বেন এটাই স্বাভাবিক। খাদ্যসংকটে থাকা এসব মানুষের জন্য সরকারীভাবে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তাতে কতটুকু সম্ভব তা বলা যাচ্ছে না। আর এ তালিকায় যুক্ত হচ্ছে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষও। সরকার এসব মানুষের জন্য বিভিন্ন শ্রেণীভিত্তিক তালিকা তৈরি করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব তালিকার বাইরে থাকছেন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকা বিপুল পরিমান মানুষ। যাদের নাম বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন উপকারভোগীর তালিকায় আছে, সেইসব মানুষ এ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে পারছেন না। তাহলে এসব মানুষ খাদ্য সহায়তা পাবে কিভাবে? যারা বয়স্ক কিংবা অন্য কোন ভাতাভোগী, তারা প্রতি তিন মাস পরপর এসব ভাতা পেয়ে থাকেন। তাহলে এ দূর্যোগ মহুর্তে তাদের খাদ্য সহায়তার কি হবে? এসব উপকারভোগী মানুষও তো খাদ্য সংকটে থাকবেন এটাই বাস্তবতা। হতদরিদ্র পরিবারের বয়স্ক কিংবা বিধবাদের অথবা হতদরিদ্র পরিবারের লোকজনই সরকারের নেয়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকারভোগীর তালিকায় আছেন। এসব মানুষকেও খাদ্য সহায়তার আওতায় আনতে হবে। সময় এসেছে বিভিন্ন দূর্যোগকালীন সময়ে সারাদেশে খাদ্য সহায়তা পাওয়ার মতো মানুষগুলোর জন্য একটি স্থায়ী ডাটাবেজ তৈরি করা। তাহলে যেকোন দূর্যোগকালীন সময়ে সে ডাটাবেজ ধরে বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা যাবে। যদি ডাটাবেজ তৈরি করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে সরকারী সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে দূর্নীতি কিংবা প্রকৃত উপকারভোগী বাদ পরার সম্ভাবনাও কম থাকবে। তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তিতে জনপ্রতিনিধিদের আর্থিক লাভবান হওয়ার সুযোগ কমে যাবে। তবে দূর্যোগকালীন সময়ে সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারের যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। শুধু সুষ্ঠু বিতরণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে তা শতভাগ সফল করাও সম্ভব। তবে এখনই সময় যারা ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার যোগ্য, তাদের আলাদা তালিকা করা। আর নিম্ন মধ্যবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষের পৃথক তালিকা করে দূর্যোগকালীন সময়ের জন্য তাদের রেশনিং ব্যবস্থা করা।

দূর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ চুরি কিংবা কালোবাজারে বিক্রি করার একটা মহোৎসব চলে এক শ্রেনীর জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের মাঝে। ত্রাণ আত্মসাতের বিষয়টি শুধুমাত্র এখন হচ্ছে তা কিন্তু নয়। এ অসাধু চক্রটি দূর্যোগকালীন বিভিন্ন সময়ে ত্রাণ চুরির মহোৎসবে মেতে উঠেন। আর বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের অনেক জনপ্রতিনিধিরা দূর্যোগকালীন সময়ে বেশি তৎপর হয়ে উঠেন ত্রান আত্মসাতে। স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণ বিতরণের দায়িত্বে থাকলেও মূলত তালিকা তৈরি থেকে বিতরণ করে থাকেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বেশির ভাগ সময়ে পর্যাপ্ত সময় দিয়ে তদারকি করা সম্ভব হয়ে উঠে না। আর এ সুযোগ নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা তালিকা তৈরি থেকে বিতরণে দূর্নীতি করার সুযোগ পান। যদি ধরে নেয়া যায়, একজন ব্যবসায়ীর ঘরে ত্রাণের চাল পাওয়া গেল? তাহলে প্রশাসন তাৎক্ষনিক ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। কিন্তু ওই ব্যবসায়ীর ঘরেতো এমনি এমনি ত্রানের চাল যায়নি। কোন কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা ত্রাণ বিতরণের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি ওই ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছেন। যদি সঠিক তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি কিংবা ত্রাণ বিতরণের সাথে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাহলে চুরি কিছুটা ঠেকানো যেতে পারতো।

স্থানীয় পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সৎ যোগ্য বক্তিরা অংশ নিতে চান না। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অনেক আর্থিক লেনদেনের প্রশ্ন আসে, দলীয় মনোনয়ন থেকে নির্বাচন পর্যন্ত। বিশাল অংকের টাকা খরচ করে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি বিভিন্ন পন্থায় তা তোলার চেষ্টা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি থেকে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নির্লোভ থেকে সততার সাথে কাজ করতে হবে। দূর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ সহায়তার সাথে জড়িতদের অত্যন্ত সতর্কভাবে প্রকৃত অভাবগ্রস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে হবে। এক্ষেত্রে জনগণকেও সজাগ হতে হবে। দূর্যোগের সময় জনপ্রতিনিধিদের কাছে যেমন জনগনের প্রত্যাশা আছে, তেমনি জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের সময়ও আপনাদেরকে একজন সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে যখন আপনি একজন অযোগ্য ও অসৎ প্রার্থীকে কোন ভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নির্বাচিত করবেন, তখন নির্বাচিত ওই জনপ্রতিনিধির কাছে আপনার সঠিক প্রাপ্ত্যতা বা সেবা পাওয়াও সম্ভব হবে না। তাই সকল পক্ষকেই দায়িত্বশীল নাগরিকের মতো কাজ করতে হবে। তবেই সম্ভব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রাণ বিতরণে অনিয়মে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন। আসুন সকলে মিলে করোনাভাইরাসের এ ক্রান্তিকালে নির্লোভ থেকে সততার সাথে অভাবগ্রস্থ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই। দেশের এ দূর্যোগ কেটে যাবেই। উঠবেই নতুন সূর্য।

লেখকঃ জাহাঙ্গীর আলম সরদার, সাংবাদিক ও সহকারী অধ্যাপক, উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজ, উলিপুর, কুড়িগ্রাম।

(বিঃদ্রঃ প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।)

The post ত্রাণ বিতরণে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বড় চ্যালেঞ্জ appeared first on স্থানীয় খবরের ডিজিটাল মুখপত্র.

]]>