।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে টিকা নিতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন এক শিক্ষার্থী। আর এ অভিযোগটি খোদ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিভাবকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগি পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৫ জানুয়ারী) উপজেলার বিষ্ণুবল্লভ এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের পুত্র ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের (বীর উত্তম মাহবুব সেনানিবাস) ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব রুদ্র করোনার টিকা নেয়ার জন্য জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর লাইনে দাঁড়ান।
এসময় উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহ্ মো. তারিকুল ইসলাম তার পরিচয় জানতে চান। পরে ওই শিক্ষার্থী তার পরিচয় দিলে এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর করেন ওই কর্মকর্তা। পরে তার হাতে থাকা ফাইল পত্র কেড়ে নেন।
এসময় ওই শিক্ষার্থী আকুতি মিনতি করে টিকা না নিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য ফাইল পত্র চাইলেও ওই কর্মকর্তার মন গলেনি। এরপর তাকে ডাকবাংলো থেকে বের করে উলিপুর সরকারি কলেজে নেয়া হয়। বাহিরের স্কুলের শিক্ষার্থী হয়ে এখানে কেন টিকা নিতে এসেছিস? তোকে রিমান্ডে নিব এবং পুলিশে দিবসহ নানান ভয়ভীতি দেখান। পরে ওই শিক্ষার্থীকে সরকারি কলেজে টিকা প্রদানকারী স্বাস্থ্য কর্মীদের হাতে তুলে দেন। সেখানে তিনি ওই শিক্ষার্থীকে প্রায় দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বলে পরিবারটি অভিযোগ করেন। পরে খবর পেয়ে শিক্ষার্থীর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করতে সক্ষক হন। একজন শিক্ষা কর্মকর্তা এমন নির্দয় আচরণে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে এ ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও সুনিদিষ্ট কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নির্যাতিত শিক্ষার্থীর পিতা শফিকুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষা অফিসার এমন আচরণ সত্যি বেদনাদায়ক। উনি কিভাবে একজন শিশু শিক্ষার্থীকে এভাবে মারধর করতে পারে। শুধু মারধর করে ক্ষান্ত হয়নি। তারা আমার ছেলে দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এ ঘটনার পর থেকে আমার ছেলে অনেকটা ভীতিগ্রস্ত। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে গত (১৬ জানুয়ারী) রবিবার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ মো. তারিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি তাকে শুধু হাত ধরে বের করে নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়েছি।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শামছুল আলম বলেন, শিক্ষা অফিসার শুধু আমার কাছে জানতে চেয়েছেন অন্য(বাহিরের) প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এখানে টিকা নিতে পারবেন কিনা? যেহেতু বাহিরের কোন শিক্ষার্থী কে টিকা দেয়ার কোন নির্দেশনা নেই, সেক্ষেত্রে তারা টিকা পাবেন না। তবে কারো সাথে খারাপ আচরণ করা মোটেও কাম্য নয়। টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/জানুয়ারি/১৮/২২