।। নিউজ ডেস্ক ।।
চির পরিচিত সাদা ডিমের পরিবর্তে এবার নাগেশ্বরীতে মিললো পাতি হাঁসের কালো ডিম। এর আগে ভোলা জেলার চর ফ্যাশনে এ ধরণের ঘটনা জেনেছে মানুষজন। তবে এ নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই কালো ডিম দেখতে শতশত মানুষ ভিড় করছে ওই বাড়িতে। বাংলাদেশে কোনো হাঁসের কালো রঙের খোলসযুক্ত ডিম পাড়ার ঘটনা দ্বিতীয়বারের মতো ঘটল।
এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাঁসের শরীরের ভেতরে ডিম তৈরির প্রক্রিয়ায় শুরুতে কুসুমটি তৈরি হয়। সেটি জরায়ু নালি থেকে দু–তিন ঘণ্টা সময় নিয়ে জরায়ুতে প্রবেশ করে। আর জরায়ুতে ডিমটি থাকে ২০ থেকে ২৫ ঘণ্টা। ওই সময়ে ডিমের খোলসটি তৈরি হয়। ফলে মূলত জরায়ুতে থাকা বিলিভারডিন বা লোহিত রক্তকণিকার ভাঙা অংশ এবং পিত্তরস মিলে তা কালচে রং ধারণ করতে পারে। প্রকৃতিতে নানা ধরনের ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে। সাদা রঙের বাঘ, লালচে শিয়াল থেকে শুরু করে কালো রঙের পাতিহাঁসের ডিম পাড়া বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে অস্বাভাবিক নয়। লাখো বা কোটি প্রাণীর মধ্যে দু–একটি ঘটনা এমন ব্যতিক্রমীভাবে ঘটে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পাখি গবেষক আ ন ম আমিনুর রহমান বলেন, প্রাণিদেহের রক্তকণিকা ভেঙে বিলিভারডিন নামে একটি উপাদান বের হয়। এটা কম-বেশি হওয়ার কারণে ডিমের খোলসের রং নীলচে বা সবুজাভ হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে জরায়ুতে ডিমের খোলসটি পরিণত হওয়ার সময়ে তাতে গাঢ় সবুজ রঙের পিত্তরস বেশি থাকতে পারে। ওই দুটি উপাদান জরায়ুতে বেশি থাকলে তা থেকে ডিমটির রং কালো হতে পারে। এ ধরনের কালো ডিম হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে খুবই ব্যতিক্রম। সম্ভবত এটি প্রথমবার ঘটল।
বিজ্ঞানী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খানের মতেও মূলত ওই হাঁসের ডিমটি কালো রঙের হওয়া একটি বিরল ঘটনা। তবে তা অস্বাভাবিক নয়। আরও কয়েকটি ডিম দেওয়ার পর হাঁসটি নীলচে বা হালকা সবুজ রঙের ডিম পাড়বে বলে মনে করছেন তিনি। এটি ঘটছে মূলত ডিমটির খোলস তৈরির সময় তাতে পিত্তরস বেশি যুক্ত হওয়ার কারণে।